দিনাজপুরে শূন্য পদ ৬৭, তালিকা সাড়ে তিনশোর!

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরে স্কুলের নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির জন্য শিক্ষক নিয়োগ করছে রাজ্য সরকার। কিন্তু শূন্য পদের অসঙ্গতিতে ধাক্কা খেয়েছে গোটা প্রক্রিয়া। বৃহস্পতিবার উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের দাড়িভিট হাইস্কুলে শিক্ষক নিয়োগকে ঘিরে প্রাণহানির পর বিষয়টি সামনে এসেছে। প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি গোটা প্রক্রিয়াতেই কোন গলদ রয়েছে? ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট জেলা স্কুল পরিদর্শককে সাসপেন্ড করা হয়েছে।

এ বার শিক্ষক নিয়োগকে ঘিরে প্রথম থেকেই জটিলতা শুরু হয়েছে। শিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানান, শূন্য পদের তালিকায় প্রচুর ভুল ভ্রান্তি ছিল। তার মধ্যে শীর্ষে ছিল উত্তর দিনাজপুর জেলা। জানা গিয়েছে, একাদশ-দ্বাদশের জন্য প্রায় ৩৫০টি শূন্যপদের তালিকা পৌঁছেছিল স্কুল সার্ভিস কমিশনে। দফতরের এক কর্তা জানান, পরে খতিয়ে দেখা যায়, শূন্য পদ আসলে ৬৭টি। কমিশনারেট থেকে যে তালিকা সেখানে এসেছিল, সেটাই ভুল ছিল। কমিশনারেটে সাধারণত ওই তালিকা পাঠায় ডিআই। 

শূন্য পদের চূড়ান্ত তালিকা তৈরির আগে কয়েক জন ডিআই-কে কমিশনে ডাকা হয়েছিল। ওই অফিসে নথি নিয়ে বসে ভুলভ্রান্তি শোধরানোর চেষ্টা করেন ডিআইরা। কিন্তু এক ডিআই সমস্ত ত্রুটি সংশোধন না করেই বিধাননগর রোড স্টেশন পর্যন্ত চলে যান। পরে তাঁকে ডেকে আনা হয়। এ ভাবে তালিকা তৈরির পরেও বহু বিভ্রান্তি রয়েছে। এমনকি, শূন্য পদ নেই, এমন জায়গাতেও শিক্ষক নিয়োগ হয়ে গিয়েছে বলে ধরা পড়ে। পরে অন্যত্র তাঁদের নিয়োগ করা হয়। 

এর জন্য কয়েক বছর ধরে গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিলম্বকে দায়ী করছেন অনেকে। ২০১২-র পরে রাজ্যে নিয়োগ না হওয়ায় শূন্য পদের তালিকা নিয়মিত বদল হওয়ার কথা। পরীক্ষার পর কোর্টে মামলা-সহ জট পার করতেই সময় লেগে যায়। কিন্তু জেলা স্কুল পরিদর্শকের অফিস থেকে সেই তালিকা নিয়ম মেনে নিয়মিত পরিবর্তন করা হয়েছিল কিনা, সন্দেহ রয়েছে। কোনও শূন্য পদে স্পেশ্যাল ট্রান্সফার হয়ে পদ পূরণ হয়েছে কিনা, সেখানেও ধোঁয়াশা ছিল। ফলে গোটা প্রক্রিয়ায় জট পাকিয়ে যায়।