ধারের টাকা শোধ না করায় বন্ধুকে মদ খাইয়ে খুন করল দশম শ্রেণির ছাত্র


বন্ধুর প্রয়োজনে ধার দিয়েছিল ৩ হাজার টাকা। কিন্তু টাকা ফেরত দেওয়ার সময় পেরিয়ে গেলেও বন্ধু টাকা ফেরত দিচ্ছিল না। তাই বন্ধুকেই রাস্তা দিয়ে সরিয়ে ফেরার ছক করে সে। মদ বলতে  অজ্ঞান বন্ধু, সেকথাও অজানা ছিল না তার। তাই মদের আসরেই বন্ধুকে ডাকে, তারপর আকন্ঠ মদ্যপান করায়। পুরো খরচটাই নিজের পকেট থেকে করে সে। এরপর গলায় ফাঁস লাগিয়ে তারই বাড়ির পিছনে গাছে ঝুলিয়ে দেয়।    বর্ধমানের কালনায় এক কিশোরের খুনের ঘটনায় উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য।

পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৫ তারিখ কালনার দশম শ্রেণির ছাত্র রোহন শেখের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।  প্রথমে মনে করা হচ্ছিল,  মানসিক অবসানে আত্মহত্যা করেছে রোহন। কিন্তু সেকথা মানতে চায়নি পরিবার। তাঁরা প্রথম থেকেই বলে আসছিলেন, খুন করা হয়েছে রোহন। এরপর রোহনের গলার ফাঁস লাগার দাগ  ও আরও বেশ কিছু বিষয় দেখে সন্দেহ হয় পুলিসের। তদন্তে গতি অন্যদিকে এগোয়।

রোহনের বন্ধুদের একে একে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিস। বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলেই পুলিস জানতে পারে, শেখ শাহিদ নামে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এক বন্ধুর কাছ থেকে সম্প্রতি তিন হাজার টাকা ধার নিয়েছিল রোহন। কিন্তু সময় মতো সেই টাকা ফেরত দিতে না পারায়, দুজনের মধ্যে ঝামেলা হয়েছিল। ইদানীং কথা বার্তাও কম হত। কিন্তু রোহনের মৃত্যুর আগের দিনও শাহিদের সঙ্গে রোহনকে দেখা গিয়েছিল বলে জানায় বন্ধুরা। এরপরই  পুলিসের নজর পড়ে শাহিদের ওপর।

 কথা বলা হয় তারই অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বন্ধু শেখ শাহিদের সঙ্গে।  প্রথমে পুরো বিষয়টিই অস্বীকার করছিল সে। কিন্তু তার কথায় একাধিক অসঙ্গতি থাকায় পুলিস জেরা চালাতে থাকে। ম্যারাথন জেরায় ভেঙে পড়ে শাহিদ। পরে পুলিসের কাছে রোহনকে খুনের কথা স্বীকার করে সে।  কালনা থানার পুলিস শাহিদকে গ্রেফতার করে।

এতটুকু বয়সে কীভাবে এত পরিকল্পিতভাবে খুন করল শাহিদ, তা ভাবাচ্ছে পুলিসকেও। এই ঘটনায় আর কেউ জড়িত রয়েছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।