একসঙ্গে ৭৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিল মিশর, নিন্দায় সরব বিশ্ব

২০১৩ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মোরসির উৎখাতের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখানোর শাস্তি হিসাবে ৭৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিল মিশর সরকার। এ ছাড়া কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে আরও ৪৭ জন মুসলিম ব্রাদারহুড সমর্থককে। শাস্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে আছেন মিশরের বেশ কয়েক জন মুসলিম ধর্মীয় নেতাও। এর তীব্র প্রতিবাদ করেছে অ্যামনেস্টি-সহ সারা পৃথিবীর মানবাধিকার সংগঠনগুলি।

২০১২ সালে দেশব্যাপী গণ আন্দোলনের পর মিশরের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরে গিয়েছিলেন হোসনি মুবারক। সামনে থেকে সেই আন্দোলনকে নেতৃত্ব দিয়েছিল মুসলিম ব্রাদারহুড। তারই ফল, ক্ষমতায় এসেছিলেন মিশরের সর্বপ্রথম নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মোরসি। কিন্তু এক বছরের বেশি ক্ষমতায় থাকতে পারেননি মোরসি। ২০১৩-র অগস্টেইসেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মোরসিকে উৎখাত করেছিলেন আবেদল ফাতাহ আল সিসি। মোরসিকে সরিয়ে নিজেই প্রেসিডেন্ট হয়ে বসেন এই সামরিক জেনারেল। তার প্রতিবাদে দেশজুড়ে রাস্তায় নেমেছিলেন মুসলিম ব্রাদারহুড সমর্থকেরা। সেনা নামিয়ে সেই আন্দোলনকে নিষ্ঠুরভাবে দমন করা হয়েছিল। বেআইনি সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল মুসলিম ব্রাদারহুডকে। সরকারি কোনও হিসেব পাওয়া না গেলেও মানবাধিকার সংগঠনগুলির অভিযোগ, অন্তত ৮১৭ জনকে গুলি করে মেরেছিল মিশর সেনা। অসংখ্য মানুষকে জেলেও ভরেছিল সামরিক 'সিসি' সরকার। তাদের মধ্যে থেকেই এবার মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হল আরও ৭৫ জনকে, যাঁদের অধিকাংশই মুসলিম ব্রাদারহুড সমর্থক।

শাস্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে আছেন চিত্রসাংবাদিক জায়েদও। তাঁকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে মিশরের আদালত। এই বছরের শুরুতেই তাঁকে 'ওয়ার্ল্ড ফ্রিডম' পুরস্কার দিয়েছিল রাষ্ট্রপুঞ্জ। ৭৫ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করেছে অ্যামনেস্টি-সহ সারা পৃথিবীর মানবাধিকার সংগঠনগুলি। বিষয়টিকে তাঁরা বলছেন বেআইনি ও অসাংবিধানিক।