বিমানে গিয়ে ডাকাতি, বিমানেই চম্পট, পুলিশের জালে অভিজাত গ্যাং


বিমানে চড়ে এ রাজ্য থেকে সে রাজ্য। গাড়ি করে গন্তব্যে। তারপর শাকরেদদের জড়ো করা এবং মওকা বুঝে হানা। অপারেশনের পর বিমানের টিকিট কেটে আকাশপথেই চম্পট। এমনই হাই প্রোফাইল আন্ত:রাজ্য ডাকাত দলের হদিশ পেল বেঙ্গালুরু পুলিশ। আপাতত শ্রীঘরে দলের সাত জন। সোনা-দানা ও নগদ মিলিয়ে অন্তত ৫০ লক্ষের সম্পত্তি উদ্ধার হয়েছে ধৃতদের কাছ থেকে।

কিন্তু এরকম 'অভিজাত' ডাকাত দলটি পুলিশের হাতে এসেছে অনেকটা কাকতালীয় ভাবেই।সেটা কীরকম?
পুলিশ সূত্রে খবর, মাস দু'য়েক আগে বেঙ্গালুরুর জে বি নগর এলাকায় একটি ডাকাতি হয়। ওই ঘটনার কিনারা করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন তদন্তকারী অফিসাররা। এরপর সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখা শুরু হয়। ফুটেজে ধরা পড়া এক জনের সঙ্গে আরমান নামে এক দুষ্কৃতীর চেহারার মিল খুজে পান তদন্তকারীরা। এই আরমান ২০১৪ সালে বেঙ্গালুরুর অশোকনগর থানার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিল। কিন্তু জামিনে ছাড়াও পেয়ে যান। এই আরমানের সম্পর্কে খোঁজ করছিলেন পুলিশকর্মীরা। শুরু হয় তথ্য জোগাড়। বেশ কিছু তথ্য হাতে এলেও তাঁর নাগাল পাচ্ছিলেন না তাঁরা।

এর মধ্যেই আশিস নামে এক জনকে আটক করে বেঙ্গালুরু পুলিশের নাইট পেট্রোলিং টিম। নেহাত সন্দেহের বশেই তাঁকে ধরা হয়। থানায় নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই অপরাধ কবুল করে আশিস। সেই সূত্র ধরেই আরমান নামে অন্য এক পাণ্ডাকেও গ্রেফতার করে পুলিশ। তারপরই গোটা গ্যাং পুলিশের জালে আসে। উদ্ধার হয় দেড় কেজি সোনা, দুই কেজি রুপো এবং নগদ টাকা। সব মিলিয়ে ৫০ লক্ষ।

ডাকাত দলের 'মোডাস অপারেন্ডি' বা অভিযানের ধরনধারণ  শুনে কিছুটা হকচকিয়ে যান দুঁদে গোয়েন্দারাও। আশিস ও আরমান জানিয়েছে, পুলিশের চোখে ধুলো দিতে তাঁরা বিমানেই বেশি যাতায়াত করতেন। তাতে সন্দেহ প্রায় হতই না। জেবি নগরে ডাকাতির আগেও দিল্লি থেকে বিমানে করে তাঁরা প্রথমে চেন্নাই যান। সেখান থেকে গাড়ি চালিয়ে বেঙ্গালুরু এবং তারপর অপারেশন চালিয়ে আবার বিমানেই ফিরে যান।  কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। দিল্লি থেকে বেঙ্গালুরু ফিরতেই পুলিশের নজরে পড়ে যান।

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের বিরুদ্ধে ডাকাতি, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র-সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর সঙ্গে আরও কেউ জড়িত কিনা, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।