এবার 'বাঙালি'দেরও নাগরিকত্ব! আফগানিস্তান নিয়েও বড় সিদ্ধান্ত পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর


দেশে থাকা আফগান ও বাঙালি উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেবে পাকিস্তান। এমনটাই জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। দশকের পর দশক ধরে নাগরিকত্বের দাবি করে আসছিলেন সেখানে থাকা আফগান ও বাঙালি উদ্বাস্তুরা। বিশ্বে পাকিস্তান হল দ্বিতীয় বড় দেশ যেখানে উদ্বাস্তু সমস্যা রয়েছে।

প্রায় ২৫ লক্ষ আফগান উদ্বাস্তু পাকিস্তানে বসবাস করে। ১৯৭৯ সালে সোভিয়েত-আফগান যুদ্ধের সময় থেকে আফগানরা পাকিস্তানে আশ্রয় নিতে থাকে। এরপর ২০০১ সালে আফগানিস্তানে আমেরিকার সেনা প্রবেশের পর থেকে উদ্বাস্তুদের ঢল নামে পাকিস্তানে।

অন্যদিকে, উর্দুভাষী বিহারী, যাদের পাকিস্তানে বাঙালি বলা হয়, তাদের নাগরিকত্ব নিয়েও সমস্যা ছিল। ১৯৭১-এ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর থেকে এদের সংখ্যা বাড়তে থাকে পাকিস্তানে। মূলত ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া উর্দুভাষীরা ১৯৭১-এর পর পালিয়ে পাকিস্তানে আশ্রয় নেন। পাকিস্তান সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১২-এ যাঁদের সংখ্যাটা ছিল প্রায় ২ লক্ষের মতো।

বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে পাকিস্তানে যাওয়া পর ৪০ বছর অতিক্রান্ত। এইসব মানুষদের সন্তানরা বড় হচ্ছে। তাদের পাসপোর্ট এবং পরিচয়পত্র দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি আফগান উদ্বাস্তুদের সন্তানরা যাঁদের জন্ম হয়েছে পাকিস্তানে, তাদেরও নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। করাচিতে এমনটাই জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।

আমেরিকায় জন্মালে যদি আমেরিকার পাসপোর্ট পাওয়া যায়, তবে পাকিস্তানের ক্ষেত্রে কেন সেটা হবে না। নিজেই প্রশ্ন করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। এবার পাকিস্তানেও সেই ব্যবস্থা চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

যদিও, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সিদ্ধান্ত সেদেশের শক্তিশালী সেনাবাহিনী কতটা মেনে নেয় এখন সেটাই দেখার। কেননা আগের সরকারগুলি সেনাবাহিনীর মতই মেনে এসেছে। যেখানে সেনাবাহিনী বলেছে, পাকিস্তানে যেসব হিংসার ঘটনা ঘটে, তা র পিছনে রয়েছে এই আফগান উদ্বাস্তুরা। তারা জাতীয় নিরাপত্তার পক্ষে বিপজ্জনক বলেও জানিয়েছিল পাকিস্তানের সেনা।

পাকিস্তানি নাগরিক হিসেবে এতদিন উদ্বাস্তুদের কোনও মর্যাদা ছিল না। এমন কী প্রশাসনের তরফেও হয়রানির মুখে পড়তে হত তাদের। গত ৩০ তেকে ৪০ বছর ধরে কেন এইসব মানুষদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি সেই প্রশ্ন তুলেছেন পাকিস্তানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী।

এই মুহুর্তে বিদেশি কূটনীতিক ছাড়া পাকিস্তানে জন্ম নেওয়া শিশুদের প্রত্যেককেই সে দেশের নাগরিকত্ব দেওয়া হয়। তবে এতে প্রতিবেশী কিংবা শত্রু দেশ থেকে আসা উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব নেওয়ার কোনও আইন সেখানে নেই।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন, সেদেশের মানবাধিকার কর্মীরা।