অভিযুক্ত ভাইপোকে বাঁচাতে মৃত স্বামীর সঙ্গে রাত কাটালেন মহিলা ।


কাটোয়া:  স্বামীর মৃতদেহের পাশে সারারাত শুয়ে রইলেন স্ত্রী। ভোরবেলা সাত-তাড়াতাড়ি দেহ সৎকারের আয়োজনে শ্মশানে যেতেই বিপত্তি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে সৎকার বন্ধ করে দিল পুলিশ। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ভাইপোকে বাঁচাতে স্বামীর মৃত্যুর ঘটনা লুকিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠল স্ত্রীর বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত ভাইপো কৃষ্ণ মালকে আটক করেছে পুলিশ। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের ভাতার থানার বাসুদা গ্রামে।

পুলিশ জানিয়েছে, মৃত বৃদ্ধের নাম লক্ষণ মাল(৬৪)। অভিযোগ, স্ত্রী কল্পনাদেবীর ভাইপোর মারধরের জেরেই ওই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। প্রতিবেশীদের দাবি, লক্ষণবাবুকে মেরে ফেলেছে কৃষ্ণ মাল। তবে কী কারণে কী থেকে ঘটনাটি ঘটেছে স্পষ্ট নয়। এদিকে বাবার মৃত্যু নিয়ে মুখ খোলেননি ছেলে প্রসেনজিৎ মাল। মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধন্দ থাকায় পরিবারের ১২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
 
জেরায় মৃতের পুত্রবধূ লক্ষ্মী মাল জানান, মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ফিরে প্রায়ই অশান্তি করতেন শ্বশুর লক্ষণ মাল। এনিয়ে সোমবার রাতেও অশান্তি হয়েছে। সেই সময় তাঁকে আটকাতে ধাক্কা মারে কৃষ্ণ মাল। তাতেই পড়ে যান ওই বৃদ্ধ। এরপর কী হয়েছিল তিনি জানেন না। ছেলে প্রসেনজিতের দাবি, বাবাকে ছটফট করতে দেখে তিনি ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কল্পনাদেবী নিজেই ছেলেক শুয়ে পড়তে বলেন।

জানা গিয়েছে, পেশায় জনমজুর লক্ষণবাবুর তিন ছেলে ও দুই মেয়ে। মেয়েদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। একই বাড়ির মধ্যে পৃথক সংসারে পরিবার নিয়ে থাকেন বড় ছেলে সঞ্জয়। বাকি দুই ছেলের সঙ্গে থাকতেন লক্ষণ ও কল্পনাদেবী। কীভাবে লক্ষণবাবুর মৃত্যু হল প্রতিবেশীরা জানতে পারেননি। সকালবেলা ভাইপো কৃষ্ণকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিবেশীদের কাছে স্বামীর সৎকারের জন্য দরবার করেন। এরপর স্থানীয়দের উদ্যোগে গ্রামের অদূরের শ্মশানে দেহ নিয়ে যাওয়া হয়। দুপুর ১২টা নাগাদ অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর পেয়ে গ্রামে ঢোকে পুলিশ। শ্মশান থেকে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনাস্থল থেকেই কৃষ্ণ মালকে আটক করেছে পুলিশ। বাকিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ভাইপোর লাঠির আঘাতে স্বামী আক্রান্ত হলেও স্ত্রী কল্পনাদেবীর নীরবতায় হতবাক পুলিশ। তিনি স্বামীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার বদলে সবাই শুয়ে পড়তে কেন বললেন, এখনও স্পষ্ট নয়। স্বামীর দেহের পাশে গোটা রাত ঘুমোলেন কীভাবে, তানিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। গোটা ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।