আইএসআই-এর নির্দেশেই পুলিশ কর্তাদের খুন! প্রমাণ পেয়েই বাতিল বৈঠক, দাবি দিল্লির

জঙ্গি-আইএসআই যোগের প্রমাণ মিলতেই বৈঠক বাতিল করা হয়, দাবি নয়াদিল্লির।

ইমরান খানের চিঠিতে সদর্থক বার্তা। তার জেরে নিউইয়র্কে ভারত-পাক বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের ঘোষণা। কিন্তু ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সেই ঘোষণা বাতিল করল দিল্লি। রাতারাতি কী এমন হল যে, এই বৈঠক বাতিল করতে হল? এই প্রশ্নে যখন তোলপাড় দুই প্রতিবেশী দেশ, তখনই তদন্তে উঠে এল বিস্ফোরক তথ্য।

বিদেশমন্ত্রকের একটি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, অপহৃত তিন স্পেশাল পুলিশ অফিসারকে খুনে নির্দেশ আসে পাক গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই)-এর কাছ থেকে। ইসলামাবাদের অঙ্গুলি হেলনেই অপরহণের ঘণ্টা খানেকের মধ্যে পুলিশ অফিসারকে খুন করে জঙ্গিরা। ওই তিন জনের সঙ্গে অপহৃত এক সাধারণ নাগরিককে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশও আসে আইএসআই-এর কাছ থেকেই। এই সংক্রান্ত আইএসআই-এর একটি বার্তা ভারতীয় গোয়েন্দাদের হাতে আসার পরই তড়িঘড়ি নিউইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সম্মেলনের ফাঁকে ভারত-পাক বিদেশমন্ত্রীর বৈঠক বাতিলের ঘোষণা করে নয়াদিল্লি।

বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রভীশ কুমার বলেন, ''এই ঘটনা ইসলামাবাদের দুষ্ট চক্রান্ত এবং ইমরান খানের মুখোশ খুলে দিয়েছে।''

গত মঙ্গলবার হিজবুল মুজাহিদিন জঙ্গিরা একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে জম্মু কাশ্মীরে নিযুক্ত পুলিশ কর্মী-অফিসারদের উদ্দেশে হুমকি দেয়, চাকরি থেকে ইস্তফা দিন, 'নয়তো মৃত্যুর জন্য তৈরি থাকুন' (রিজাইন অর ডাই)। এরপর শুক্রবার ভোরে সোপিয়ানের বাতাগুন্দ গ্রামের বাড়ি থেকে জম্মু কাশ্মীর পুলিশের তিন স্পেশাল অফিসার ও এক সাধারণ নাগরিককে তুলে নিয়ে যায় জঙ্গিরা। তার ঘণ্টা খানেক পরেই গুলিতে ঝাঁঝরা তিন জনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। যদিও অপহৃত স্থানীয় বাসিন্দাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

কিছুদিন আগেই দক্ষিণ কাশ্মীরের বিভিন্ন জায়গা থেকে কয়েক জন পুলিশ অফিসারের পরিবারের ১১ সদস্যকে অপহরণ করে জঙ্গিরা। কয়েক জন জঙ্গিকে মুক্তি দেওয়ার পর তাঁদের ছেড়েও দেওয়া হয়। কিন্তু সোপিয়ানের ক্ষেত্রে কী এমন হল যে, দাবি দাওয়া মেটানোর সময় পর্যন্ত দেওয়া হল না, তার আগেই খুন করা হল তিন জন স্পেশাল পুলিশ অফিসারকে। এতেই খটকা লাগে ভারতীয় গোয়েন্দাদের। নেপথ্যের কারণ খুঁজতে উঠে পড়ে লাগেন গোয়েন্দারা।

সেই তদন্তেই গোয়েন্দাদের হাতে আসে ওই গুরুত্বপূর্ণ আইএসআই-বার্তা। তারপরই বৈঠক বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় নয়াদিল্লি। জানানো হয়, মোদীকে লেখা নয়া পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের চিঠিতে আন্তরিকতার ছাপ ছিল। তাতে সাড়া দিয়েই নিউইয়র্কে সুষমা-খুরশিদ বৈঠকের ঘোষণা করা হয়। কিন্তু আইএসআই-এর এই বার্তায় ইঙ্গিত মেলে জম্মু কাশ্মীরে পঞ্চায়েত ভোটে অশান্তি বাধাতেই অপহরণ ও খুন করা হয়েছে।

অন্যদিকে এই ঘটনার পর ভারতীয় সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াতও কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, পাকিস্তানের এই বর্বরতার উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।