তেত্রিশ বছরের লজ্জা মুছে শাস্তিযোগ্য তিন তালাক, সিলমোহর রাষ্ট্রপতির

প্রায় ৩৩ বছর আগে ভারতের ইতিহাসে এক লজ্জাজনক নজির গড়েছিল রাজীব গান্ধীর নেতৃত্বে তৎকালীন কংগ্রেস সরকার। মৌলবাদীদের সামনে মাথা নত করে শাহ বানোর অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। সংবিধানের মারপ্যাঁচে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু এবার সেই লজ্জাজনক অধ্যায় মুছে ফেলল দেশ। তিনবার তালাক বলেই আর দায় ঝেড়ে ফেলা যাবে না। ভেঙে দেওয়া যাবে না বিবাহের সম্পর্ক। ইতিহাস গড়ে রাষ্ট্রপতির সিলমোহরে এবার দেশে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হল অমানবিক তিন তালাক প্রথা। মুসলিম মহিলাদের স্বস্তি দিয়ে কেন্দ্রের আনা তিন তালাক অর্ডিন্যান্সে সই করলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।
 
স্বাধীনতা দিবসেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সাফ জানিয়েছিলেন, যেভাবেই হোক না কেন তুলে দেওয়া হবে তিন তালাক প্রথা। সেই প্রতিশ্রুতিই রাখলেন তিনি। এবার থেকে  তিন তালাকের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে তিন বছরের জেল ও জরিমানা দিতে হবে দোষীদের। এছাড়াও নির্যাতিত স্ত্রীকে ভরণপোষণ দেওয়াও বাধ্যতামূলক করা হল। উল্লেখ্য, আগেই সংসদে 'মুসলিম উইমেন প্রটেকশন অফ রাইটস অফ ম্যারেজ বিল-২০১৭' বা তিন তালাক বিল পেশ করেছিল কেন্দ্র। লোকসভায় পাশ হলেও বিরোধীদের প্রতিবাদে রাজ্যসভায় আটকে যায় বিলটি। কংগ্রেস-সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলির প্রস্তাবিত বিলে একাধিক সংশোধনের দাবি জানিয়েছিল। এছাড়াও তাদের দাবি ছিল, প্রস্তাবিত সংশোধনী এনে স্ট্যান্ডিং কমিটিতে আলোচনার পর পরের অধিবেশনে পেশ করা হোক বিল। একাধিক সংশোধন করলেও বিরোধীদের ফাঁদে পা না দিয়ে অর্ডিন্যান্স জারি করে কেন্দ্র।   

উল্লেখ্য পাকিস্তান, বাংলাদেশের মতো মুসলিম প্রধান দেশগুলিতেও অবৈধ তিন তালাক প্রথা। তবে শরিয়তের দোহাই দিয়ে ভারতে এই বর্বরোচিত প্রথার পক্ষেই দাঁড়িয়েছে এআইপিএলএমবি বা মুসলিম পার্সোনাল ল' বোর্ড। পরিষ্কারভাবে নিজের মত না জানালেও তিন তালাক বিল নিয়ে বিরোধিতায় সরব প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস-সহ অন্যান্যরা। বুধবার কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তোপ দেগে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদ অভিযোগ করেন, ভোটব্যাংকের জন্য তিন তালাক বিলে দোটানা দেখিয়েছে কংগ্রেস। যার ফলে, অকারণে দেরি হচ্ছিল। প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিনে ফেসবুক, স্কাইপ-সহ অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তিন তালাক দেওয়ার ঘটনা ঘটে।