বরফ গলল, বৈঠকে বসছে দুই কোরিয়া

অনেক জল্পনার শেষে দু'জনের দেখা হয়েছিল সিঙ্গাপুরে। কিন্তু কোরীয় উপদ্বীপে শান্তিপ্রতিষ্ঠা নিয়ে আলোচনা হলেও রফাসূত্র মেলেনি। তখন থেকেই সম্পর্কের পুরনো টানাপড়েনে ফিরে গিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কিম জং উন। কিন্তু সেই জটিলতা কাটার ইঙ্গিত মিলল বৃহস্পতিবার। উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম তাঁর প্রতি আস্থা দেখানোয় তাঁকে ধন্যবাদ জানালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তার আগে অবশ্য জটিলতা কাটাতে কিমের কাছে প্রতিনিধি পাঠিয়েছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইন। সেপ্টেম্বরে ফের শীর্ষ বৈঠকে বসতে রাজি হয়েছে দুই কোরিয়া।

গত কালই কিমকে একটি ব্যক্তিগত চিঠি লেখেন মুন। দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা চুং ইউই ইয়ং-এর হাত দিয়ে সেটিকে পিয়ংইয়্যাংয়ে পাঠিয়ে দেন। এর পরেই পরিস্থিতি ঘুরে যাওয়ার ইঙ্গিত মিলতে থাকে। উত্তর কোরিয়ার সরকারি মিডিয়া জানায়, কিম পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে তাঁর দায়বদ্ধতা ও লক্ষ্যের কথা তুলে ধরেছেন। কোরীয় উপদ্বীপে শান্তি প্রতিষ্ঠায় এগোতে রাজি হয়েছে সোল ও পিয়ংইয়্যাং। আর আজ সোলের তরফে বলা হয়, সেপ্টেম্বরে শীর্ষ বৈঠকে বসবে দুই কোরিয়া। বৈঠক চলবে ১৮ তারিখ থেকে ২০ তারিখ পর্যন্ত। কিম জং উন পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে পদক্ষেপ করতে রাজি হয়েছেন বলেও দক্ষিণ কোরিয়া দাবি করেছে।

কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা কমাতে রাজি হয়েও কিম নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়ায় টালবাহানা করছেন বলে অভিযোগ এনেছিল আমেরিকা। সে কারণেই গত মাসে মার্কিন বিদেশ সচিব মাইক পম্পোয়োর পিয়ংইয়্যাং সফর বাতিল করান ট্রাম্প। কিমের পাঠানো একটি চিঠি দেখেও 

ট্রাম্প ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন বলে জল্পনা ছিল। কিন্তু আজ পরিস্থিতি যে অনেকটাই বদলেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের টুইটেই তা স্পষ্ট। ট্রাম্প লিখেছেন, ''কিম জং উন আমার প্রতি আস্থা দেখিয়েছেন। চেয়ারম্যান কিমকে ধন্যবাদ। আমরা একজোট হয় কাজকে সফল করব।'' এর আগে দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা চুং ইউই ইয়ং দাবি করেন, কিম তাঁকে জানিয়েছেন, বিভিন্ন বিষয়ে জটিলতা থাকলেও ট্রাম্পের প্রতি তাঁর আস্থা শেষ হয়ে যায়নি। পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ কর্মসূচিকে বাস্তবায়িত করতে আমেরিকার পাশে থেকে কাজ করতে চাইছে উত্তর কোরিয়া। তবে এ ব্যাপারে আমেরিকা যে ভাবে এগোতে চায়, তা নিয়ে কিছু দিন আগেই ক্ষোভ জানিয়েছিলেন কিম। উত্তর কোরিয়ার বক্তব্য ছিল, আমেরিকা 'গ্যাংস্টারের মতো' আচরণ করছে।

কিমের সঙ্গে আলোচনার পরে উত্তর কোরিয়ার নেতার হতাশাকেও আজ তুলে ধরেন চুং। জানান, কিম তাঁর কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, তিনি পুঙ্গি-রিতে পরমাণু অস্ত্রপরীক্ষার ক্ষেত্রটি নষ্ট করে দিয়ছেন। সেখানে কখনওই আর পরমাণু পরীক্ষা সম্ভব নয়। কিন্তু উত্তেজনা কমাতে তাঁর উদ্যোগকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে না আন্তর্জাতিক মহল। তিনি যে সঠিক পদক্ষেপ করছেন, দুনিয়ার সামনে তা বোঝানো উচিত আমেরিকার। চুংয়ের মাধ্যমে সেই বার্তাই দিয়েছেন কিম।