বিবির বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কথা ফেসবুক লাইভে জানিয়ে আত্মঘাতী যুবক


মালদা : বিবির বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে মানসিক অবসাদ ছিল। তার উপর বিবি ও তাঁর আব্বার বাড়ির লোকজনের চাপে জীবন হয়ে উঠেছিল যন্ত্রণাময়। সেই চাপ সহ্য করতে না পেরে ফেসবুকে লাইভে সমস্ত ঘটনা জানিয়ে আত্মঘাতী হলেন এক যুবক। মৃতের নাম রকি সাটিয়ার(৩৮)৷ বাড়ি পুরাতন মালদা পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের শুঁড়িপাড়ায়৷ গতরাতে ইংরেজবাজার থানার যদুপুর সংলগ্ন কমলাবাড়ি গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। পরে গভীর রাতে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন আত্মঘাতী যুবকের দাদা। তদন্ত শুরু হলেও এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

২০১২ সালে চাঁচল থানার গোয়ালপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল আলমের মেয়ে সুহানা পারভিনকে নিকাহ করেন রকি ৷ তাঁদের তিন বছরের একটি মেয়ে রয়েছে ৷ বিয়ের পর অবশ্য রকি নিজেদের বাড়িতে থাকতেন না । বিবির কথায় নিজের বাড়ি ছেড়ে গত ৫ বছর ধরে তিনি কমলাবাড়ি গ্রামে সুহানার নানা রানাউল হকের বাড়িতে থাকতেন । রকি ইংরেজবাজার পৌরসভার একজন অস্থায়ী কর্মী ছিলেন । তবে কিছুদিন আগে একটি ব্যবসা শুরু করেন । তাঁর একটি চারচাকার গাড়িও ছিল । ফলে, আর্থিক সমস্যা খুব একটা ছিল না তাঁর ।

পুলিশে দায়ের করা লিখিত অভিযোগে রকির দাদা লুৎফর রহমান বলেন, "নিকাহর পর থেকেই বিবিকে নিয়ে সমস্যায় ভুগছিল ভাই । ও জানতে পারে, তাঁর বিবির বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। সেই সম্পর্ক ছেড়ে দেওয়ার জন্য সুহানাকে অনেক বুঝিয়েছিল। সুহানার এই সম্পর্কের কথা ওর পরিবারের সবাই জানত ৷ কিন্তু, তাঁরা তাকে সম্পর্ক ছেড়ে বেরিয়ে আসতে বলেননি। উপরন্তু নানাভাবে রকির উপর চাপ সৃষ্টি করতেন । সেই চাপ কখনও ছিল আর্থিক, কখনও বা পারিবারিক । এত কিছু সহ্য করতে না পেরে রকি ফেসবুকে সমস্ত ঘটনা জানিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে ৷"

রকির ভাতিজা শেখ মণিরুল বলেন, "বিবি ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে এর আগেও চাচা একবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন৷ সেবার কোনওরকমে তাঁকে নিরস্ত্র করা হয়৷ কিন্তু, চাপ আর সহ্য করতে পারেননি। নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে সমস্ত ঘটনা লাইভ করে জানান । তা দেখতে পায় আমার বন্ধুরা । সেখান থেকেই খবর পাই ৷ চাচার খোঁজ নিতে শুরু করি ৷ কিন্তু, কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি ৷ শেষ পর্যন্ত মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে যাই । জানতে পারি, চাচার গাড়িতে করে মৃতদেহ এনে কেউ বা কারা ইমারজেন্সিতে রেখে পালিয়ে গেছে। হাসপাতাল চত্বরে চাচার গাড়িটিও দেখতে পাই ৷ আমরা নিশ্চিত, শ্বশুরবাড়ির লোকজনই চাচাকে হাসপাতালে রেখে পালিয়ে গেছে। চাচা অভিযুক্তদের সবার নাম লিখে রেখে গেছেন। তাদের কঠোর শাস্তি চাই৷" 

একই দাবি করেছেন রকির আপা পপি বসাকও ৷ তিনি সাফ বলেন, "ভাইকে শ্বশুরবাড়ির লোকজনই খুন করেছে ৷"