লক্ষ লক্ষ শিশুর প্রাণ বাঁচিয়েছে মোদীর 'স্বচ্ছ ভারত অভিযান', ইঙ্গিত রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্টে


ভারতে শিশুমৃত্যুর সংখ্যা ২০১৭ সালে এসে আগের চেয়ে অনেকটাই কমে গিয়েছে। দুই বছর আগে যা ছিল ১০ লক্ষের বেশি তা এখন ২ লক্ষ কমে হয়েছে বছরে ৮ লক্ষ ২ হাজার জন। প্রতিকারযোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া শিশু মৃত্যুর হার আগের চেয়ে কমছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্ট বলছে, পরিস্রুত পানীয় জল, হাত ধুয়ে খাওয়া, পুষ্টিকর খাবার খাওয়া, পরিচ্ছন্ন শৌচ ব্যবহার ইত্যাদি নানা কারণে ডায়রিয়া সহ জলবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা কমে গিয়েছে। নোংরা শৌচালয় ও দূষিত পানীয় জলের কারণে শিশু বয়সে ৮৮ শতাংশ ক্ষেত্রে ডায়রিয়া হতে পারে। তা থেকে নানা ক্রনিক রোগ শরীরে বাসা বাঁধে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, নানা ধরনের সংক্রমণে শিকার হয় শরীর। তার মধ্যে অন্যতম হল টিবি ও নিউমোনিয়ার মতো রোগ। তবে স্বচ্ছ ভারত অভিযান চালু করার পরে ২০১৯ সালের মধ্যে ভারতকে খোলা শৌচ থেকে মুক্ত করার ডাক দেওয়া হয়েছে। ২০১৫ সালে যেখানে প্রতি হাজার জনে পাঁচ বছরের শিশুর মৃত্যুর হার ছিল ৪৩, তা এক বছরের মধ্যে ২০১৬ সালে নেমে এসেছে ৩৯ জনে। ২০১৪ সালে ভারতে স্বচ্ছ ভারত অভিযান চালু হয়। তারপর থেকে গ্রামীণ এলাকায় ৮ কোটি ৫২ লক্ষ শৌচালয় তৈরি হয়েছে। যার ফলে দেশের ৭১৮টি জেলার মধ্যে ৪৫৯টিকে খোলা শৌচ মুক্ত বলে ঘোষণা করা হয়েছে। গ্রামীণ ভারত পরিচ্ছন্ন হওয়ায় রোগভোগের পরিমাণ কমেছে ও মানুষের স্বাস্থ্য উন্নত হওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। যে জেলাগুলিকে খোলা শৌচ মুক্ত বলে ঘোষণা করা হয়েছে সেই অঞ্চলে শিশুদের ডায়রিয়া সহ অন্য রোগের প্রাদুর্ভাব কমে গিয়েছে। কর্ণাটক, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের ১০টি জেলায় সমীক্ষা চালিয়ে এই রিপোর্ট উঠে এসেছে। হিন্দুস্তান টাইমস সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের পেশ করা স্বচ্ছতা সম্পর্কিত এই রিপোর্ট। শৌচ মুক্ত জেলাগুলিতে ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ৯.৩ শতাংশ। যেখানে অরক্ষিত অঞ্চলে তা অন্তত ১৩.৯ শতাংশ বলে রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্টে দাবি করেছে। ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে কম কর্ণাটকে, আর সবচেয়ে বেশি মধ্যপ্রদেশে বলে জানা গিয়েছে। সমীক্ষা বলছে, শৌচ মুক্ত জেলায় মায়েদের স্বাস্থ্যও খোলা শৌচ এলাকার মায়েদের চেয়ে ভালো। যে অঞ্চলে পাইপের মাধ্যমে জল পৌঁছে যাচ্ছে সেখানেও জলবাহিত নানা রোগের প্রাদুর্ভাব অন্য এলাকার চেয়ে অনেক কম বলে জানানো হয়েছে। মূলত শৌচ ও পরিচ্ছন্নতা নিয়ে প্রশাসনিক স্তরে যে প্রচার ও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তার সুফল হিসাবেই সারা দেশে শিশুমৃত্যুর হার কমেছে। স্পষ্ট নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে এবং তা যাতে মানুষ মেনে চলে তার জন্য প্রশাসনের সজাগ দৃষ্টি রয়েছে। যার ফলে তার সুফল ইতিমধ্যে ভারত পেতে শুরু করেছে।