"অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার নামে আইওয়াশ করে টাকা নেওয়া হয়েছে।


কলকাতা : ১০ হাজার, ১৫ হাজার বা ২০ হাজার টাকা। অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা উন্নত করতে বাগরি মার্কেটের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বছর দুই আগে এইভাবেই হাজার হাজার টাকা নেওয়া হয়েছিল। এখন তারা মনে করছে এটা ছিল একরকম "আইওয়াশ"।

গত শনিবার রাত ২টো নাগাদ বাগরি মার্কেটে আগুন লাগে। ঘটনার পরে দমকল জানিয়েছে এই মার্কেটে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না। কিন্তু এই মার্কেটের দোকানিদের অবশ্য অন্য কথা। তাঁরা কেউ জানেন না যে কেন এই উন্নত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা কাজ করল না। মার্কেটের এক ব্যবসায়ী রামকৃষ্ণ পাল বলেন, "দুই বছর আগে রুম প্রতি ১০, ১৫ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছিল অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা উন্নত করার জন্য। তখন অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা উন্নত করা হয়েছে। কিন্তু এখন প্রশ্ন সেগুলো কেন কাজ করল না?" তিনি আরও বলেন, "শনিবার রাতে আগুন লাগার পরে জানা গেছে ট্যাংকে জল ছিল না। কেন জল ছিল না?"

প্রসঙ্গত, আগুন নেভানোর জন্য আনা হয়েছিল হাইড্রোলিক ল্যাডার। কিন্তু কাজে লাগানো যায়নি। কারণ ওখানে রয়েছে অনেক ইলেক্ট্রিকের তার। এই‌ তারের জন্য কাজ করতে পারল না ল্যাডার। এক্ষেত্রে রামকৃষ্ণবাবুর প্রশ্ন, "পুজোর সময় আমরা দেখি তার কেটে ঠাকুর নিরঞ্জন দেওয়া হয়। ট্রাম লাইনের তার কেটেও নিরঞ্জন দেওয়া হয়। তাহলে কেন এখানে তার কেটে‌ ল্যাডার কাজে লাগানো গেল না?" এছাড়াও বাগরি মার্কেটের পরিবেশ ঘিঞ্জি ফলে আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয় দমকলকে। এবিষয়ে রামকৃষ্ণ পাল বলেন, "বলা হচ্ছে, বাগরি মার্কেট খুব ঘিঞ্জি এরিয়া। কিন্তু এই মার্কেট বড় বাজারের সব থেকে বড় মার্কেট। এখানে ৬টি গেট আছে। ৫টি সিঁড়ি আছে। মার্কেটের সামনে ৩২ ফুট চওড়া রাস্তা রয়েছে অথচ অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা কাজে এল না।" মার্কেটে তার গোডাউন আগুনে শেষ হয়ে গেছে। শুধু তাই নয়। তার মতো আরও অনেক ব্যবসায়ী নিঃস্ব হয়ে গেছেন। বাগরি মার্কেটের এই ব্যবসায়ী বলেন, "অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা পুরোটাই ভেঙে পড়েছে। আইওয়াশ করে আমাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।"

এপ্রসঙ্গে এই মার্কেটের অন্য এক দোকানি রঞ্জিত দেবনাথ বলেন, "অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার জন্য ১০, ১৫, ২০ হাজার করে টাকা নিয়েছেন মালিক। আমাদের কাছে রসিদ রয়েছে।" ব্যবসায়ীরা আরও জানিয়েছেন, বাগরি মার্কেট থেকে জল নিয়ে আগে অন্য বিল্ডিংয়ের আগুন নেভানো হয়েছিল। অথচ, এইবার বাগরি মার্কেটেই ছিল না জল। এই মার্কেটের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা খতিয়ে না দেখে প্রশাসন যদি লাইসেন্স দিয়ে থাকে, তা হলে 'আইওয়াশ" হয়েছে।