একমাত্র শিক্ষিকা বদলি হলে স্কুলের কী হবে: কোর্ট


শিক্ষক-শিক্ষিকার ঘাটতি এবং স্কুলে বদলি নিয়ে টানাপড়েন একসঙ্গে মিলে গেলে কী ধরনের জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে, একটি মামলায় তার প্রমাণ মিলল শুক্রবার। স্কুলের একমাত্র শিক্ষিকা যদি বদলি হয়ে যান, স্কুলটির ভবিষ্যৎ কী হবে, রাজ্যের কাছে তা জানতে চাইল কলকাতা হাইকোর্ট।

বিচারপতি অরিন্দম সিংহ শুক্রবার হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারকে নির্দেশ দিয়েছেন, এই বিষয়ে অ্যাডভোকেট জেনারেল, স্কুলশিক্ষা দফতরের সচিব, কমিশনার ও স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-র কাছে নোটিস পাঠাতে হবে। আগামী ৫ অক্টোবর আদালতে তাঁদেরই জানাতে হবে, যে-স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকা বলতে এক জনই আছেন, তিনি বদলি হয়ে গেলে স্কুলটা চলবে কী করে।

সাগর থানার মৃত্যুঞ্জয়নগর বালিকা বিদ্যালয় নিকেতন উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের ওই শিক্ষিকার নাম আলোলিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই স্কুলে শিক্ষিকার অনুমোদিত পদ ন'টি। কিন্তু পাঁচটি পদ দীর্ঘদিন ধরে খালি। চার শিক্ষিকার মধ্যে তিন জন আগেই 'বিশেষ কারণ' দেখিয়ে বদলি নেন। কলকাতার হালতুর বাসিন্দা বাড়ি থেকে স্কুলের আলোলিকা দূরত্বের কারণ দেখিয়ে বদলি চান। তাঁর আইনজীবী এক্রামুল বারি জানান, বিশেষ পরিস্থিতিতে তাঁর মক্কেলকে মগরাহাটের একটি স্কুলে বদলির 'রিলিজ অর্ডার' বা ছাড়পত্র দিতে গত ফেব্রুয়ারিতে নির্দেশ দেন বিচারপতি সিংহ। তা কার্যকর না-হওয়ায় আদালত অবমাননার মামলা হয়।

স্কুলের পরিচালন সভাপতি অজিতকুমার সাহুর আইনজীবী অঞ্জন ভট্টাচার্য জানান, আলোলিকাই তাঁদের স্কুলের একমাত্র শিক্ষিকা। তাঁকে ছাড়পত্র দিলে অনিশ্চিত হয়ে পড়বে ৬৮ জন ছাত্রীর ভবিষ্যৎ। ১০ ছাত্রী মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসতে পারবে না। কারণ, তাদের 'রেজিস্ট্রেশন' করাবেন ওই শিক্ষিকাই। মিড-ডে মিল, কন্যাশ্রী ও শিক্ষা সাথী প্রকল্পও মুখ থুবড়ে পড়়বে। ওই শিক্ষিকা পরিচালন সমিতির সম্পাদিকা। তাঁকে ছাড়পত্র দিতে সভাপতির কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু স্কুলের ভবিষ্যৎ কী হবে, আদালত তা জানিয়ে দিক।

বিচারপতি স্কুলশিক্ষা সচিবকে নির্দেশ দেন, একমাত্র শিক্ষিকা বদলি হলে স্কুলের কী হবে, তা জানানো হোক। এক্রামুল জানান, ছাড়পত্রের দাবির মামলায় তিনি বলেছিলেন, শিক্ষা দফতরের নিয়ম রয়েছে, এই ধরনের পরিস্থিতিতে স্কুল পরিচালন সমিতি এক বছরের জন্য স্থানীয় স্তরে যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ করতে পারে।