কলকাতার পথশিশুদের জন্য তৈরি হচ্ছে আধার কার্ড


২০১৬ সালের একটি সমীক্ষায় উঠে আসে একটি তথ্য যা পরবর্তীকালে চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায় রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের। এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার করা ওই সমীক্ষায় জানা যায় কলকাতায় পথশিশুর সংখ্যা ২০ হাজারেরও কিছু বেশি। এদের অধিকাংশেরই জন্মের কোনও শংসাপত্র নেই। পরিচয়পত্র না থাকায় স্কুলে যেতে পারে না তারা, মেলে না পুষ্টিকর খাবার। শুধু তাই নয়, পরিচয়পত্রের অভাবে অসুস্থ হলে চিকিৎসাও জোটে না তাদের কপালে। কিন্তু পরিচয়পত্র তৈরি করাতে গেলে প্রয়োজন জন্ম শংসাপত্রের। কিন্তু তার জন্য যে সব তথ্য পুরসভার কাছে জমা দেওয়ার প্রয়োজন, সে সব কিছুই নেই পরিবারগুলির কাছে। এ বার ভাবার বিষয় হল, শুধু কলকাতাতেই যদি পথশিশুর সংখ্যা ২০ হাজারেরও বেশি হয়, তাহলে গোটা দেশে এমন নিরাপত্তাহীন, অসহায় শিশুর সংখ্যা কত? কী-ই বা তাদের ভবিষ্যৎ!

এ বার ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করতে ও তাদের মৌলিক অধিকারগুলি পাইয়ে দিতে পথশিশুদের আধার কার্ড তৈরি করতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্যের নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ দফতর এবং রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন। দু'টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে হাত মিলিয়ে শহরের পথশিশুদের জন্যই তৈরি হচ্ছে ওই পরিচয়পত্র। শুক্রবার সেই উদ্যোগকেই বাস্তবায়িত করতে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে উত্তর কলকাতার একটি স্কুলে।

শহরের বিভিন্ন অঞ্চল চিহ্নিত করে (পথশিশুদের সংখ্যার ভিত্তিতে) একটি পরিকল্পনা মানচিত্র তৈরি করা হয়েছে। এর পর স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিনিধিরা ওই অঞ্চলগুলিতে গিয়ে পথশিশুদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করছেন (কত দিন ধরে শিশুগুলি সেখানে রয়েছে, তাদের সঙ্গে কারা রয়েছেন এবং তাদের অভিভাবকদের আদি বাসস্থান কোথায় ইত্যাদি)। এর পর স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসন ও কাউন্সিলরের সাহায্যে ওই শিশুদের আধার কার্ড করানোর ব্যবস্থা হচ্ছে। ২০১৭-র শেষের দিকেই দিল্লি, মুম্বইয়ের মতো বড় শহরে পথশিশুদের আধার কার্ড তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। এ বার কলকাতার হাজার হাজার পথশিশুও পাবে তাদের পরিচয়পত্র। তারাও পাবে শিক্ষা, চিকিত্সার মতো তাদের মৌলিক অধিকারগুলি।