বাইক নিয়ে উপদেশ! স্থগিত করে দিল কোর্ট


দু'চাকার গাড়ি (মোটরবাইক) কেনা এবং তার নথিভুক্তি নিয়ে রাজ্যের পরিবহণ দফতরের উপদেশমূলক বিজ্ঞপ্তির উপরে অন্তর্বর্তিকালীন স্থগিতাদেশ জারি করল হাইকোর্ট।

২৮ জুন পরিবহণ দফতর ওই বিজ্ঞপ্তি জারি করে সব আঞ্চলিক পরিবহণ কর্তৃপক্ষ (আরটিএ)-কে জানায়, লাইসেন্স না-থাকলে দু'চাকার যান কেনা বা নথিভুক্ত করা যাবে না। সেই বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সোসাইটি ফর ইন্ডিয়ান অটোমোবাইল ম্যানুফ্যাকচারার্স (সিয়াম) কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করে। বিচারপতি হরিশ টন্ডন মঙ্গলবার সেই বিজ্ঞপ্তির উপরে নভেম্বর পর্যন্ত স্থগিতাদেশ দিয়েছেন।

সিয়ামের আইনজীবী অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায় জানান, বিচারপতি টন্ডন ওই বিজ্ঞপ্তির তিন ও চার নম্বর উপদেশের উপরে স্থগিতাদেশ দেন। সেখানে বলা হয়েছে, লাইসেন্স ছাড়া দু'চাকার গাড়ি (মোটরবাইক, স্কুটার ইত্যাদি) কেনা যাবে না। কোনও অপ্রাপ্তবয়স্ক দু'চাকার গাড়ি কিনতে চাইলে অভিভাবককে কেনার সময় উপস্থিত থেকে সম্মতি দিতে হবে। সিয়ামের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল সুগত সেনের বক্তব্য, এ রাজ্যে মাসে গড়ে এক লক্ষ দু'চাকার গাড়ি বিক্রি হলেও অগস্টে তা নেমে আসে ৩২ হাজারে। তবে উৎসবের মরসুমে সাধারণত গাড়ির বিক্রি বাড়ে। আদালতের নির্দেশের ফলে আসন্ন উৎসবে ফের বিক্রি বাড়বে বলে তাঁদের আশা। তিনি বলেন, ''দুর্ঘটনা কমাতে গাড়ি শিল্প সর্বদাই সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।''

৩১ অগস্টের শুনানিতে অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল অভ্রতোষ মজুমদার সওয়াল করেন, সরকারের উদ্দেশ্য দুর্ঘটনা কমানো। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ ছিল, উদ্দেশ্য ভাল হলেও তিন ও চার নম্বর উপদেশ 'অযৌক্তিক'। অপ্রাপ্তবয়স্ক কেউ অভিভাবকের অনুমতি নিয়ে দু'চাকার গাড়ি কিনে চালানোর সময় দুর্ঘটনার কবলে প়ড়লে কী হবে, তার সদুত্তর নেই বিজ্ঞপ্তিতে। বিশেষ করে অপ্রাপ্তবয়স্ক কেউ যখন গাড়ি চালানোর লাইসেন্স পেতে পারে না।

সিয়ামের আইনজীবী জানান, আইনে চালক ও মালিকের সংজ্ঞা আলাদা। দু'চাকার গাড়ির চালকের লাইসেন্স থাকা বাধ্যতামূলক। কিন্তু গাড়ি যিনি কিনবেন, তাঁর লাইসেন্স থাকতে হবে, এমন কথা পরিবহণ আইনে বলা নেই।

বিচারপতির পর্যবেক্ষণ ছিল, অনেক সংস্থা বাড়ি বা়ড়ি জিনিস পৌঁছনোর পরিষেবা দেয়। কোনও সংস্থা নিজের নামে দু'চাকার গাড়ি কিনে কর্মী নিয়োগ করলে তাঁদের লাইসেন্স জরুরি। সংস্থার লাইসেন্স থাকা বাধ্যতামূলক হবে কেন? লাইসেন্সহীন কোনও চালককে কড়া শাস্তি দিতেই পারে রাজ্য। তাঁর জরিমানাও করতে পারে। কিন্তু অযৌক্তিক উপদেশ দেওয়া যায় না।

বিচারপতির নির্দেশ, ওই বিজ্ঞপ্তি নিয়ে ১৩ নভেম্বরের মধ্যে হলফনামা দিতে হবে সরকারকে। আবেদনকারী পাল্টা হলফনামা দেবেন ১৯ নভেম্বর। ২৮ নভেম্বর পরবর্তী শুনানি।