ছাত্র-ছাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষায় বাড়তি নজর


পড়ুয়াদের জন্য স্কুলে স্কুলে চালু রয়েছে মিড-ডে মিলের ব্যবস্থা। কিন্তু তার পরেও পড়ুয়াদের স্বাভাবিক পুষ্টি ও বৃদ্ধি আদৌ ঠিক ভাবে হচ্ছে কি? সে দিকেই এ বার বাড়তি নজর দিতে চলেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও কলকাতা সর্বশিক্ষা মিশন বিভাগ। এর জন্য ইতিমধ্যেই জেলার প্রতিটি স্কুলে ওজন ও উচ্চতা পরিমাপ করার যন্ত্র দেওয়া শুরু করেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন।

স্কুলে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত মিড-ডে মিল প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ অর্থের ৬৫ শতাংশ দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। বাকি অর্থ দেয় রাজ্য। এর আগে এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু যে কারণে এই প্রকল্প, তা আদৌ কার্যকরী হচ্ছে কি না, সেই নজরদারি সর্বত্র চালানো হয় না বলেই দাবি বহু স্কুল কর্তৃপক্ষের। এ বার তাই কলকাতা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় এই প্রকল্পের উপরে নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে। কলকাতা সর্বশিক্ষা মিশনের চেয়ারম্যান কার্তিক মান্না জানিয়েছেন, স্কুলগুলিকে ওজন মাপার মেশিন এবং স্কেল ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়েছে। তা দিয়ে প্রতি তিন মাস অন্তর পড়ুয়াদের শারীরিক চিকিৎসা করা হয়। তবে তিনি বলছেন, ''কিন্তু সরকার চাইছে বিষয়টিতে আরও গুরুত্ব দিতে। তাই নজরদারি আরও বাড়ানো হবে। পড়ুয়াদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা যেন বেশি করে হয়, তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।''

এ নিয়ে ইতিমধ্যেই উদ্যোগী হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা প্রশাসন। জেলার সর্বশিক্ষা মিশনের এক কর্তা জানান, প্রতিটি স্কুলকে 'ওয়েট কাম হাইট' মেশিন দেওয়ার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যে ডায়মন্ডহারবার ও কাকদ্বীপের স্কুলে মেশিন বিলির কাজ সম্পূর্ণ। এর পরে বিষ্ণুপুর-২, বারুইপুর, ক্যানিং-২, ঠাকুরপুকুর, বজবজ, মহেশতলা-সহ বিভিন্ন এলাকার স্কুলে এই মেশিন দেওয়া হবে। প্রতি সপ্তাহে পড়ুয়াদের ওজন উচ্চতা লিখে রাখতে হবে স্কুল কর্তৃপক্ষকে। প্রতি মাসে সেই পরিসংখ্যান নথিভুক্ত করতে হবে পড়ুয়াদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্টে।

ওই জেলার স্কুল কর্তৃপক্ষের একাংশের অভিযোগ, এতদিন যাবৎ স্কুলগুলিতে ওজন ও উচ্চতা পরিমাপের ভাল বন্দোবস্ত না থাকায় পড়ুয়াদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ঠিক ভাবে করা হত না। প্রতি মাসে এক বারের বদলে মাঝেমধ্যে ওই পরীক্ষা করা হত। গোটা ব্যবস্থাকে আরও সুশৃঙ্খল করতে এর পরে প্রতি সপ্তাহে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট পাঠাতে হবে জেলাশাসককে। কোনও পড়ুয়ার স্বাভাবিক বৃদ্ধি না হলে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই কর্তা বলেন, ''মিড-ডে মিলের প্রধান লক্ষ্যই হল, পড়ুয়াদের পুষ্টি ও বৃদ্ধি স্বাভাবিক রাখা। তাই স্কুলগুলিকে এই মেশিন দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি গোটা বিষয়টির ওপরে বাড়তি নজরদারিও থাকবে।'' আগামী অক্টোবরের মধ্যে জেলার অধিকাংশ স্কুলে এই মেশিন বিলি করাই এখন প্রশাসনের লক্ষ্য।