পুলিসের কনস্টেবল পদের পরীক্ষায় জুতোয় চিপ ভরে টুকলি

পুলিসের কনস্টেবল পদের পরীক্ষা দিতে এসে টুকলির সরঞ্জাম–সহ কাটোয়া ও বনগাঁ থেকে গ্রেপ্তার হল ৭ জন যুবক। টোকার জন্য নিয়ে এসেছিল উন্নতমানের সূক্ষ্ম ইলেকট্রনিক ডিভাইস, ব্লু–টুথ হেডফোন। কারও ডিভাইসটি ছিল জুতোর মধ্যে। কারও–বা ছিল হাতের নকল ব্যান্ডেজের ভেতর। আর কানে ছিল স্পিকার লাগানো ব্লু–টুথ। কেউ স্মার্ট ফোনের খোলস ফেলে শুধু যন্ত্রাংশটাই একটা এটিএম কার্ডের কভারে ঢুকিয়ে ছিল। এভাবে অভিনব পদ্ধতিতে টুকলি করতে যাওয়ার আগেই রবিবার হাতেনাতে ধরা পড়ে গেল পুলিসি চাকরির পরীক্ষার্থীরা। এই ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায় পরীক্ষা কেন্দ্রে। কাটোয়া কলেজ থেকে গ্রেপ্তার হয়েছে  অচ্যুত ঘোষ, কাটোয়া রামকৃষ্ণ বিদ্যাপীঠে পরীক্ষা দিতে এসে ধরা পড়ে চিন্ময় ঘোষ। পূর্ব বর্ধমানের অতিরিক্ত পুলিস সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় জানান, দু'‌জনকেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কীভাবে কোথা থেকে এইসব সরঞ্জাম পেল, তা জানার চেষ্টা চলছে।

একই পদ্ধতি ব্যবহার করে নকল করার চেষ্টা করার অভিযোগে বনগাঁ থেকে ৫ পরীক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বনগাঁর এসডিপিও অনিল রায় জানান, ধৃতরা জুতোর ভেতরে লুকোনো মোবাইল ডিভাইস এবং তার সঙ্গে ক্যাপসুলের মতো ব্লু–টুথ হেড ফোন নিয়ে নকল করার উদ্দেশে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার চেষ্টা করছিল। তল্লাশির সময় তারা ধরা পড়ে। ধৃতদের প্রত্যেকের বাড়ি নদীয়া জেলায়। এর পাশাপাশি মহকুমার অন্য থানা এলাকা থেকে আরও ৩ জনকে টুকলির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

কীভাবে ব্যাপারটা সামনে এল? কাটোয়া পুলিস সূত্রে জানা গেছে, মহকুমায় এদিন মোট ১৪টি কেন্দ্রে পরীক্ষা হয়। প্রতিটি পরীক্ষাকেন্দ্রেই ছিল কড়া নিরাপত্তার ঘেরাটোপ। পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢোকানোর সময় ভাল করে তল্লাশি করার ব্যবস্থা ছিল। মেটাল ডিটেক্টর–সহ আনুষঙ্গিক ব্যবস্থা থাকার কারণেই ধরা পড়ে যায়। জেরায় ধৃতেরা স্বীকার করেছে প্রশ্ন দেখে ডিভাইসের মাধ্যমে বাইরে রাখা নির্দিষ্ট লোককে বলে উত্তর জেনে নেওয়াই ছিল উদ্দেশ্য।

কীভাবে তারা যন্ত্রপাতি সেট করেছিল? কাটোয়া থেকে ধৃত অচ্যুতের ডিভাইসটি ছিল জুতোর মধ্যে। আর কানে ছিল স্পিকার লাগানো ব্লু–টুথ। স্মার্ট ফোনের খোলস ফেলে শুধু যন্ত্রাংশটাই একটা এটিএম কার্ডের কভারে রেখে জুতোয় ঢোকানো ছিল। আর চিন্ময়ের হাতের ব্যান্ডেজের ভিতরে ছিল ডিভাইসটি। এইভাবে টুকলির পদ্ধতি দেখে তাজ্জব তল্লাশির দায়িত্বে থাকা পুলিসকর্মীরা। তবে এসবের মাস্টারমাইন্ড কে বা কারা, তার খোঁজ চলছে।