বেড়েই চলেছে আগুনের দাপট, শোনা যাচ্ছে বিস্ফোরণের শব্দও, এখনও নিয়ন্ত্রণে নয় বাগরির আগুন


ফিরে এল ১০ বছর আগের নন্দরাম মার্কেট অগ্নিকাণ্ডের ভয়াবহ স্মৃতি।
ফের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড কলকাতায়। শনিবার রাত আড়াইটে নাগাদ আগুন লাগে মধ্য কলকাতার ক্যানিং স্ট্রিটের বাগরি মার্কেটের একটি ছ'তলা বাড়িতে। দ্রুত খবর দেওয়া হয় দমকলে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শুধু এই বাড়িটিতেই হাজার খানেক দোকান ছিল। আগুন লাগার কারণ সঠিক ভাবে জানতে না পারলেও দমকল এবং পুলিশ প্রাথমিক ভাবে মনে করছে, শর্ট সার্কিট থেকেই এই অগ্নিকাণ্ড। আগুন নেভাতে গিয়ে আহত হয়েছেন এক দমকল কর্মী।

দমকল ও পুলিশ সূত্রে খবর, দমকলের ৩০টি ইঞ্জিন আগুন নেভানোর কাজ করছে। আগুন লাগার খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছন মেয়র তথা দমকলমন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়, পুলিশ কমিশনার-সহ উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরা। রাত আড়াইটে নাগাদ আগুন লাগলেও রবিবার সকাল ৯টা নাগাদও বাড়িটির দোতলার বেশি উঠতে পারেননি দমকম কর্মীরা। আগুনের তীব্রতা এতটাই বেশি যে, গোটা এলাকা কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। দমকলকর্মীরা বাড়িটির জানলা ও শাটার ভেঙে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বাড়িটির দেওয়ালে বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রবল আগুনের জেরেই এই ফাটল। স্বাভাবিক ভাবেই ফাটল দেখা দেওয়ায় বাড়ি ভেঙে যাওয়ায় আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। মাঝে মাঝে মার্কেটের ভিতর থেকে বিকট শব্দও শোনা যাচ্ছে। মেয়র তথা দমকলমন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ''আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার সব রকম চেষ্টা করছে দমকল। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে আসে দমকল, পুলিশ এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীরা। তবে, এলাকাটি ঘিঞ্জি হওয়ায় মই লাগিয়ে দ্রুত আগুন নেভানোর কাজ করা সম্ভব হয়নি।''
 
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বাড়িটিতে প্রচুর দাহ্য পদার্থ মজুত ছিল। ছিল ওষুধ তৈরির রাসায়নিকও। দমকল আধিকারিকদের আনুমান, দাহ্য পদার্থ মজুত থাকার কারণেই পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নিয়েছে। পুজোর মুখে এ ধরনের আগুনে বড়সড় ক্ষতির মুখে ব্যবসায়ীরা। প্রাথমিক ভাবে, কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

যদিও, আগুনের জেরে প্রাণহানির খবর এখনও পর্যন্ত নেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, "অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কোনও হতাহতের খবর নেই। মার্কেটের ভিতর কেউ আটকেও নেই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সব রকম চেষ্টা চালাচ্ছে দমকল।"

মেয়র তথা দমকল মন্ত্রী জানিয়েছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পরই আগুন লাগার প্রকৃত কারণ জানা সম্ভব।

আগুন লাগার পরই গোটা এলাকায় যান নিয়ন্ত্রণ করা হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় বেশ কিছু রাস্তা। তবে, রবিবার ছুটির দিন হওয়ায় তেমন যানজট তৈরি হয়নি।

দাউদাউ করে জ্বলছে। শনিবার রাতে আগুন লাগার পর।—নিজস্ব চিত্র। 
অন্য দিকে, দমকল দেরি করে কাজ শুরু করেছে বলে ক্ষোভ জানিয়েছেন ব্যবসায়ীদের একাংশ। এমনকি, দমকলের গাড়ি এলেও তাতে জল ছিল না বলে অভিযোগ করেছেন কেউ কেউ। যদিও সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে দমকলের তরফে জানানো হয়েছে, আগুন নেভানোর কাজ ঠিক ভাবেই করা হচ্ছে।