অবসাদে আত্মহত্যা করতে পারি, আদালতে বললেন ভারতী ঘোষের স্বামী রাজু


কয়েক সপ্তাহের মধ্যে মত বদলালেন প্রাক্তন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের স্বামী এমভি রাজু। এখন আর সংশোধনাগারে আলাদা সেলে থাকতে চান না তিনি। বরং চান আর পাঁচটা বন্দিদের সঙ্গেই তাঁকে রাখা হোক।

দাসপুরের সোনা লুট ও প্রতারণা মামলায় গ্রেফতার হয়ে মেদিনীপুর জেলে রয়েছেন রাজু। বৃহস্পতিবার ছিল মামলার শুনানি। এ দিন মেদিনীপুরের বিশেষ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক অনির্বাণ চৌধুরীর এজলাসে রাজু বললেন, ''আমি মানসিক অবসাদে ভুগছি। আত্মহত্যার ইচ্ছে চলে আসছে আমার মধ্যে। আমি যে কোনও সময় আত্মহত্যা করতে পারি। কারও সঙ্গে কথা বলতে পারছি না বলেই এই পরিস্থিতি হচ্ছে। আলাদা কোনও সেলে নয়। আমাকে অন্য বন্দিদের সঙ্গেই রাখা হোক।" সঙ্গে যোগ করেন, "জীবনে কোনও অপরাধমূলক কাজ আমি করিনি। আমি খুব সাধারণ একজন।" অথচ এই রাজুই জেলে প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। তাঁকে অন্য কোনও জেলে স্থানান্তরের আবেদন জানিয়েছিলেন। সেই সময় এই অভিযুক্তের দাবি ছিল, তাঁর স্ত্রী ভারতী ঘোষ জেলার পুলিশ সুপার ছিলেন। অনেক মাওবাদী ধরেছেন। অনেক দুষ্কৃতী ধরেছেন। দুষ্কৃতী, মাওবাদীদের অনেকে মেদিনীপুর জেলে রয়েছে। তারা যে কোনও সময় তাঁর উপর হামলা করতে পারে। 

সবদিক দেখে রাজুকে মেদিনীপুর জেলে এক সেলে আলাদা ভাবে রাখা হয়। বাড়তি নজরদারির ব্যবস্থা করা হয় সেলে। সেলের আশেপাশে জেলকর্মীদের টহলেরও ব্যবস্থা করা হয়। জেল সূত্রের খবর, রাজুকে যে সেলে রাখা হয়েছে তার আশেপাশে অন্য কোনও বন্দি নেই। বিচারকের উদ্দেশে রাজুকে বলতে শোনা যায়, "একা এ ভাবে থাকার ফলেই মানসিক অবসাদ গ্রাস করছে আমাকে। আমাকে অন্তত সেলের বারান্দায় চলা ফেরার সুযোগ দেওয়া হোক।" আদালতে 'ভুল' স্বীকার করেন রাজুর আইনজীবী অপূর্ব চক্রবর্তী। তিনি বলেন, "এক সময় ওই (বিশেষ নজরদারিতে রাখার) আবেদন জানিয়েছিলাম। ওটা ভুল হয়ে গিয়েছিল। অন্য বন্দিরা টেলিভিশন দেখতে পান। আমার মক্কেল তাও পান না। আমার মক্কেলকে সাধারণ বন্দি হিসেবেই দেখা হোক।''

 ইতিমধ্যে ভারতীর বাড়ি থেকে বাজেয়াপ্ত টাকা ও সোনা ঘাটাল আদালতে জমা করেছে সিআইডি। এ দিন সে বিষয়টি আদালতকে জানান সিআইডির আইনজীবী। মামলার পরবর্তী দিন ধার্য হয়েছে ২৬ সেপ্টেম্বর। ওই দিন ফের রাজুকে আদালতে হাজির করানো হবে। পরে অপূর্ব বলেন, ''মানসিক অবসাদ এড়াতে আমার মক্কেলকে অন্য বন্দিদের সঙ্গে এক সেলে রাখার আবেদন জানিয়েছিলাম। আবেদনের ভিত্তিতে আদালত জেলের থেকে রিপোর্ট চেয়েছে।''