নিকাহ্ হালালা’র জন্য চাপ, শ্বশুরের ধর্ষণের শিকার হলেন উত্তরপ্রদেশের মহিলা


নিকাহ্ হালালার 'অজুহাতে' বৌমাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল শ্বশুরের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদের। রবিবার পুলিশ জানিয়েছে, ২০১৪ সালের ৭ ডিসেম্বর বিয়ে হয় ওই মহিলার। কিন্তু, ২০১৫ সালের ১৫ ডিসেম্বর শ্বশুর বাড়ির লোকজন অত্যাচার করে তাঁকে তাড়িয়ে দেয়।

২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে শ্বশুর বাড়ির বিরুদ্ধে থানায় বধূ নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করেন ওই মহিলা। এর পর গত ডিসেম্বরে দুই পরিবারের মধ্যে সমঝোতা হয়। ফের শ্বশুর বাড়ি ফিরে আসেন মহিলা।

নিকাহ্ হালালা প্রথা অনুযায়ী, তালাকপ্রাপ্ত কোনও মহিলা তাঁর প্রাক্তন স্বামীকে ফের বিয়ে করতে চাইলে প্রথমে তাঁকে অন্য কাউকে বিয়ে ও সহবাস করে ফের তালাক নিতে হয়। মহিলার অভিযোগ, এই প্রথার সুযোগ নিয়ে শ্বশুরকে বিয়ে করার জন্য চাপ দিতে শুরু করে তাঁর শ্বশুর বাড়ির লোকজন। বিয়েতে রাজি না হওয়ায় একটি বন্ধ ঘরে তাঁকে ধর্ষণ করে শ্বশুর। এই ঘটনায় স্বামী-শ্বশুর এবং আরও পাঁচ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই মহিলা।

মহিলার দাবি, সেই শুরু তাঁর দুঃস্বপ্নের। অভিযোগ, এর পরই তাঁর স্বামী, শ্বশুর, তাঁর ভাই এবং দুই মৌলবি দাবি করতে শুরু করেন, শ্বশুর বাড়িতে থাকতে হলে নিকাহ্ হালালা করতে হবে। তাদের দাবি ছিল, এক সময় শ্বশুর বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন ওই মহিলা। সেই ঘটনা তালাক হিসেবেই গণ্য হবে। সে জন্য তাঁদের 'বিধান' ছিল, পুরনো স্বামীর সঙ্গে থাকতে হলে নিকাহ্ হালালা আবশ্যিক।

মহিলার অভিযোগ, এর পরই তিনি শ্বশুর বাড়ির বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেন। কিন্তু, দুই মৌলবি-স্বামীর কাকা সকলে জোর দিতে থাকেন ফের বিয়ের জন্য। তাঁরা চাপ দিতে থাকেন শ্বশুরকে বিয়ে করার জন্য।

কিন্তু, সেটা না মানায় এক দিন সকালে একটি বন্ধ ঘরে তাঁকে ধর্ষণ করেন শ্বশুর। পরে তাঁকে তালাক দেন তিনি।

মহিলার অভিযোগ, পরে স্বামী তাঁকে 'ধর্ষণ' করেন। এবং তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। সেই থেকে ফের শ্বশুর বাড়ি ছাড়া তিনি। তিনি একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। 

মহিলার অভিযোগ, এর পরই পুরো বিষয়টি তিনি জেলা শাসকের কাছে জানান। আবেদন করেন পুলিশের কাছেও। এটা কানে আসার পরই শ্বশুর বাড়ির লোক জন তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিতে থাকে। গত শনিবার অভিযুক্ত পাঁচ জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়। যদিও এর পর থেকে পলাতক সকলে।