৩৩ বোতল বিয়ার! কুককে বিদায়ী উপহার সাংবাদিকের


"এই চার দিন ছিল আমার জীবনের সব থেকে অবিস্মরণীয় মুহূর্ত। আমার অনেক বন্ধুই এই কয়েকদিন আমাকে অভিবাদন জানিয়েছে, তবে আজ যা হল (শতরান) তা কোনও দিনই ভোলার নয়। শেষ কয়েকটা ওভারে দর্শকরা যেভাবে বার্মি আর্মি গান গাইলো, তা ছিল অবিশ্বাস্য রকম দারুণ"।


বড় ব্যাটসম্যান কে? যিনি প্রথম ম্যাচে শতরান করেন না কি যিনি জীবনের শেষ ম্যাচে শতরান করেন? সবথেকে সহজ উত্তর, 'দুজনই বড়'। সৌরভ গাঙ্গুলির কথাই ভাবুন না, লর্ডসে শতরান দিয়ে শুরু আর শেষ ইনিংসে তাঁর স্কোর কার্ডে লেখা হল শূন্য। এবার আপনিই বলুন, তিনি কী বড় ব্যাটসম্যান নন?

এবার ভাবুন, যার এক যুগ ক্রিকেট জীবনের শুরুটা শতরান দিয়ে, আর শেষটাও শতরানেই হল, তিনি কতটা বড় ব্যাটসম্যান? চাঁদে দাঁড়িয়ে পৃথিবীকে দেখলে ঠিক যতটা বড় দেখায়, ঠিক ততটা বড়। কুকের ক্রিকেট জীবন ঠিক এতটাই বড়।

১৬১ ম্যাচে ১২ হাজার ৪৭২ রান। শতরান ৩৩টি। দ্বিশতরান আছে ৫টি। আর  অর্ধশতরান রয়েছে ৫৭টি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে যখন অবসর নিলেন, তাঁর ব্যাটিং গড়ের পাশে লেখা হল ৪৫.৩৫। টেস্ট ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রানের মালিক যারা, সেই তালিকায় পাঁচ নম্বরেই নাম রয়েছে তাঁর। এরপরও অ্যালিস্টারের মাহাত্ম্য নিয়ে আর প্রশ্ন তোলা যায় কী? বিশ্ব ক্রিকেটে অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঁ হাতি হিসেবে লারার নাম প্রথমেই আসে, সে কথা মাথায় রেখেই অ্যালিস্টার কুককেও তাঁর কাছাকাছিই বসাতে হচ্ছে, কারণ তাঁর দুর্দান্ত ধারাবাহিক পারফরম্যান্স।

সব ব্রিটিশ ক্রিকেটারের মতো অ্যাসেজ জয় নিঃসন্দেহে তাঁর জীবনের কঠিনতম শৃঙ্গ জয়। তবে ভারতের বিরুদ্ধে ওভালের চারদিনও  যে সেই সাফল্যের থেকে কম কিছু ছিল না, তা নিজ মুখেই স্বীকার করে নিলেন অ্যালিস্টার কুক। জীবনের শেষ ইনিংসে শতরান (১৪৭) করার পর সাংবাদিক সম্মেলন এসে প্রথম প্রশ্নের উত্তরেই কুকের স্বীকারোক্তি, "এই চার দিন ছিল আমার জীবনের সব থেকে অবিস্মরণীয় মুহূর্ত। আমার অনেক বন্ধুই এই কয়েকদিন আমাকে অভিবাদন জানিয়েছে, তবে আজ যা হল (শতরান) তা কোনও দিনই ভোলার নয়। শেষ কয়েকটা ওভারে দর্শকরা যেভাবে বার্মি আর্মি গান গাইলো, তা ছিল অবিশ্বাস্য রকম দারুণ"।

প্রসঙ্গত সাংবাদিক সম্মেলনের শেষে অ্যালিস্টারকে অভিনন্দন জানিয়ে তাঁর জন্য বিদায়ী উপহার তুলে দেন এক সাংবাদিক। ব্রিটিশ ক্রিকেটে কুকের জীবনের ৩৩টি টেস্ট শতরানের উজ্জ্বল উপস্থিতিকে স্মরণীয় করে তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয় ৩৩ বোতল বিয়ার ।