তৃণমূল নেত্রীর হাতে বন্দুক! কোথায় পেলেন?


প্রবাদ হল, 'ঘরপোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ডরায়'। ব্যাপারটা যেন অনেকটা সেরকমই। সদ্য প্রধানের দায়িত্ব নেওয়া তৃণমূল নেত্রী আলোনা ইয়াসমিনের একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়। তা নিয়ে শুরু হয় শোরগোল। ওই ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ওই নেত্রী হাতে একটি বন্দুক নিয়ে তা একদিকে তাক করে রয়েছেন। কোথায় পেলেন এই বন্দুক? তাক করে রয়েছেন কার দিকে? তার উপর আবার নেত্রী। সব নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে ওঠে। পরে অবশ্য জানা গিয়েছে, তাঁর হাতে ছিল 'এয়ার গান'। পুলিশ জানিয়েছে, ওই গানের জন্য কোনও লাইসেন্সের প্রয়োজন হয় না। তবে তা রেজিস্ট্রেশন করাতে হয়। কোচবিহারের পুটিমারি-ফুলেশ্বরী গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের দায়িত্বে রয়েছেন আলোনা ইয়াসমিন। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, "যা অবস্থা তাতে তো এখন আর কোনও ছবিও তোলা যাবে না।"

পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় থেকেই কোচবিহারে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে একাধিক ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। কোথাও তৃণমূল কর্মী খুন হয়েছেন। কোথাও তৃণমূলের গোষ্ঠী লড়াইয়ে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশের হাতে গ্রেফতারও হয়েছে একাধিক। দিন কয়েক আগেই 'স্টেনগান' হাতে তৃণমূলের দিনহাটার আটিবাড়ি ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের স্বামী নরেশ বর্মণের ছবি প্রকাশ্যে আসে। ওই ব্যক্তির খোঁজে হন্যে হয়ে ঘুরছে পুলিশ। তার পরে ফের এক সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধানের হাতের ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। পুটিমারি-ফুলেশ্বরীর তৃণমূল কর্মী আমিনুর রহমানের ফেসবুক 'পেজে' ওই ছবি প্রথম 'পোস্ট' করা  হয়। পরে অবশ্য তা মুছেও দেওয়া হয়। তৃণমূলের ওই কর্মী আমিনুর রহমান জানান, ওই এলাকায় প্রতি বছর ঘোড়দৌড়ের মেলা হয়। গতবছর ওই মেলায় 'বন্দুক দিয়ে বেলুন ফাটানোর একটি দোকান বসেছিল। তাঁরও দোকান রয়েছে বাজারে। স্বাভাবিক ভাবেই ওই দোকানির সঙ্গে তাঁর সখ্য তৈরি হয়। তিনি বলেন, "একদিন দুপুরে গাছের একটি শুকনো ডালকে তাক করি। সেখানে আলোনা ইয়াসমিন ছিল। উৎসাহের বশে তিনিও সেটি তাক করেছিলেন। তখন বেশ কিছু ছবি তোলা হয়। সেই ছবি হঠাৎ সামনে পেয়ে পোস্ট করি। তা নিয়ে হইচই হবে ভাবিনি।" আলোনা পাঁচ বছর পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন। কোচবিহার ১ ব্লক তথা জেলাতে মহিলা তৃণমূল নেত্রীর প্রথম সারিতেই তাঁকে বরাবর দেখা যায়। ওই নেত্রী বলেন, "কর্মীদের সঙ্গেই ছিলাম। সবাই মিলে মজা করছিলাম। সেই ছবি কেউ পোস্ট করেছে। তাতে খারাপের কী কাছে?" কোচবিহারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, "বেআইনি অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চলছে।"