কিছু একটা করুন! টাকার পতন নিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে বলল মোদী সরকার

টাকার দামের রেকর্ড পতনে বেসামাল কেন্দ্র এবার রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিল।  গত সপ্তাহেই এই নিয়ে নির্দেশ পৌঁছেছে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের কাছে, এমনটাই জানা যাচ্ছে একটি গোপন রিপোর্টে। একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে সেই রিপোর্ট। যদিও এ নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক।

গত এক মাস ধরে টাকার দামে লাগাতার পতনে উদ্বিগ্ন সারা দেশ। সোচ্চার বিরোধীরা, প্রভাব পড়েছে শেয়ার বাজারে, খারাপ অবস্থায় দেশের আমদানি-রফতানি, শোচনীয় অবস্থায় দেশের বিদেশী মুদ্রার ভাঁড়ার। সামগ্রিক চাপের মুখে অবশেষে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দ্বারস্থ হল কেন্দ্র। কী ব্যবস্থা নিলে টাকার দামে নিয়ন্ত্রণ আনা সম্ভব, তা জানতে চেয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।

টাকার দামে পতন আটকাতে কেন্দ্রের প্রথম নজর অনাবাসী ভারতীয়দের হাতে থাকা বিদেশী মুদ্রার দিকেই। অনাবাসী ভারতীয়দের জন্য আকর্ষণীয় সঞ্চয়ী প্রকল্প তৈরি করার কথা ভাবা হচ্ছে। অনাবাসী ভারতীয়রা এই প্রকল্পে বিদেশী মুদ্রা জমা দিলে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বিদেশী মুদ্রার ভাঁড়ার বেড়ে উঠবে। তার ফলে ডলার প্রতি টাকার মূল্যে নিয়ন্ত্রণ আনা সম্ভব হতে পারে বলে মনে করছে কেন্দ্র। কিন্তু এই ভাবে টাকার পতন কতটা সামাল দেওয়া যাবে, তা নিয়ে সন্দিহান অনেক বিশেষজ্ঞই। তবে অনাবাসী ভারতীয়দের জন্য প্রকল্প ছাড়া আরও বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে, যদিও তা নির্দিষ্টভাবে জানানো হয়নি রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে।

এই বছরে ডলার প্রতি টাকার মূল্য পড়ে গিয়েছে প্রায় ১১.৬ শতাংশ, যা সমকালীন রেকর্ড। সোমবার বাজার বন্ধের সময় ডলার প্রতি টাকার মূল্য দাঁড়িয়েছিল ৭২.৬৬ টাকা। স্বাধীনতার পর কখনও এত শস্তা হয়নি টাকা, যা সর্বকালীন রেকর্ড।

টাকার দামে পতন আটকাতে জুন মাসে ৬১৮ কোটি মার্কিন ডলার বিক্রি করেছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। মে মাসেও ৫৮০ কোটি টাকা অর্থমূল্যের মার্কিন ডলার বাজারে ছেড়েছিল তারা। তাই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ডলারের ভাঁড়ারও খুব ভাল জায়গায় নেই।

অশোধিত তেলের দাম বৃদ্ধি, একই সঙ্গে টাকার দাম পড়ে যাওয়া। দু'টি কারণে বেসামাল কেন্দ্র যেভাবে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দ্বারস্থ হল, এরকমটা আগে কখনও ঘটেনি বলেই বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

টাকার দামের রেকর্ড পতনে বেড়েছে দেশের বাণিজ্য ঘাটতিও। গত সপ্তাহেই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি জানিয়েছিলেন, টাকার দাম পড়ায় উদ্বেগের কিছু নেই। তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নেওয়ার মতোও কিছু হয়নি বলে দেশবাসীকে আশ্বস্ত করেছিলেন তিনি। কিন্তু তার পরই যেভাবে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দ্বারস্থ হল কেন্দ্র, তাতে অবশ্য ধরা পড়ল উদ্বেগের আসল ছবিই।