‘লভ জিহাদ’-এর জিগির তুলে মেরঠে মুসলিম যুবকের যৌনাঙ্গে আঘাত!

'লভ জিহাদ'-এর জিগির তুলে গণধোলাই, এমনকি খুন পর্যন্ত হতে দেখেছে এ দেশ। সেই ঘটনারই আরও এক বার সাক্ষী রইলউত্তরপ্রদেশের মেরঠ। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ার পরই শোরগোল শুরু হয়েছে।

নাক-মুখ ফেটে গিয়ে ঝরঝর করে রক্ত ঝরছে, চোখ থেকে রক্ত বেরোচ্ছেআর সমানতালে চলছে লাথি-ঘুসি-কিল। সেই সঙ্গে চলছে শাসানি। 'লভ জিহাদ'-এর অভিযোগ এনে এক মুসলিম যুবককে এ ভাবেই মারধরের ঘটনা প্রকাশ্যে এল। শুধু তাই নয়, অভিযোগ পুলিশের সামনেই ওই যুবককে মারধর করা হচ্ছিল, কিন্তু তারা ছিল নীরব দর্শক।

ঠিক কী হয়েছিল?
রবিবার সকালে হিন্দু সম্প্রদায়ের এক তরুণী ওই যুবকের বাড়িতে  গিয়েছিলেন বই নেওয়ার জন্য। বই নিয়ে তরুণী বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসতেই ১৫-১৬ জনের এক দল যুবকআচমকাই ওই যুবকের বাড়িতে হামলা চালায়। যুবককে টেনে বের করে প্রথমে শাসিয়ে বলা হয়, 'ভিন্‌ ধর্মের মহিলার সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্কের নামে রোম্যান্স করা হচ্ছে?' যুবকের দাবি, এ রকম কোনও ব্যাপার নয়— এ কথা বলা সত্ত্বেও তাঁর কথায় কান দেয়নি হামলাকারীরা। তরুণীকেও শাসানো হয়। অভিযোগ, এর পরই শুরু হয় গণধোলাই। লাথি-ঘুসি-কিল-চড় কোনও কিছুই বাদ যায়নি। রক্ত বার হওয়া পর্যন্ত তাঁকে পেটানো হয় বলে অভিযোগ যুবকের। শুধু তাই নয়, তাঁর যৌনাঙ্গেও পর পর আঘাত করা হয়।

এই ঘটনা যখন ঘটছে সেই সময় রাজ্য পুলিশের টহলদারি একটি ভ্যান সেখানে আসে। অভিযোগ, যুবককে মারধর করা হচ্ছে দেখেও পুলিশ তাঁকে বাঁচাতে এগিয়ে যায়নি। তরুণীর অভিযোগ, বাঁচানো তো দূরের কথা, এক মহিলা কনস্টেবল এসে তাঁর হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে গিয়ে পুলিশের গাড়িতে বসায়। তাঁদের মধ্যে কোনও সম্পর্ক নেই এ কথা বলা সত্ত্বেও পুলিশ কোনও কানই দেয়নি বলেও অভিযোগ।

শুধু এই ঘটনায় নয়, মঙ্গলবারে আরও একটি ঘটনার একটি ভিডিয়ো সামনে আসে। সেখানে দেখা যায় পুলিশই এক মহিলাকে বেধড়ক মেরে গাড়িতে তুলে দিচ্ছে। রাজ্যে একের পর এক ঘটনায় পুলিশের এমন ভূমিকায় বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে রাজ্য পুলিশ প্রশাসন। প্রশ্ন উঠছে, যেখানে পুলিশের রক্ষকের ভূমিকা পালন করার কথা, সেটা না করে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করল কী ভাবে?

পর পর দুটো ঘটনা প্রসঙ্গে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে রাজ্য পুলিশের ডিজি ওমপ্রকাশ সিংহকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, কিছু পুলিশকর্মীর এহেন আচরণের জন্য প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে গোটা পুলিশ মহলকে। পাশাপাশি তিনি এ-ও জানান, পুলিশের এ ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং অমানবিক আচরণ বরদাস্ত করা হবে না। দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।