৫০০ বা ২ হাজার টাকার ছেঁড়া নোট বদলে আর পুরো টাকা দেবে না ব্যাঙ্ক


কলকাতা: বাজারে যে দু'হাজার টাকা এবং ৫০০ টাকার নোট চলছে, সেগুলির আকার যথেষ্ট ছোট। সেই ছোট নোট নিয়ে এবার নাকাল হতে পারেন সাধারণ মানুষ। কারণ, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়ে দিয়েছে, নোটগুলির সামান্য অংশ ছেঁড়া থাকলে এবং সেই নোট বদলাতে গেলে ব্যাঙ্ক বা আরবিআই আর পুরো টাকা ফেরত দেবে না। আরবিআই বলছে, ৫০০ বা দু'হাজার টাকার নোটের যদি ২০ শতাংশ ছিঁড়ে যায়, সেক্ষেত্রে সেই ছেঁড়া নোটের বদলে অর্ধেক টাকা পাবেন গ্রাহক। অর্থাৎ, দু'হাজার টাকার নোটের যদি ২০ শতাংশ ছিঁড়ে যায়, তাহলে তার বদলে গ্রাহক পাবেন এক হাজার টাকা। ৫০০ টাকার ক্ষেত্রে মিলবে ২৫০ টাকা। যদি ওই নোটগুলির ৬০ শতাংশই ছিঁড়ে যায়, তাহলে একটি টাকাও পাবেন না গ্রাহক, জানিয়েছে আরবিআই। 
কেন আগের পরিস্থিতির তুলনায় বর্তমান পরিস্থিতিতে বেশি সমস্যায় পড়বেন গ্রাহক? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নোট বাতিলের আগে বাজারে যে ৫০০ এবং এক হাজার টাকার নোট চালু ছিল, সেগুলির আকার ছিল অনেকটাই বড়। সেই নোট ছিঁড়ে গেলে তা বদলানোর ক্ষেত্রে নিয়ম এত কড়া ছিল না। যেমন ৫০০ টাকা বা হাজার টাকার নোটের ৩৫ শতাংশ ছিঁড়ে গেলে, তবেই তার বিনিময়ে গ্রাহক অর্ধেক টাকা পেতেন। তার চেয়ে কম ছিঁড়লে, পুরো টাকাই পেতেন তাঁরা। অর্থাৎ টাকা ফেরতের সুযোগ থাকত বেশি। কিন্তু এখন পরিস্থিতি আলাদা। কারণ এমনিতেই নোটগুলির আকার ছোট। তার ২০ শতাংশ ছিঁড়ে যাওয়া মানে নোটের সামান্য অংশ ছিঁড়ে যাওয়া। সাধারণ মানুষ যদি নোট ব্যবহার করার সময় একটু অসাবধান হন, তাহলেই তাঁকে বড় অঙ্কের খেসারত দিতে হবে।
ছেঁড়া নোট বদলানোর ক্ষেত্রে হিসেব স্পষ্ট করে দিয়েছে আরবিআই। তারা জানিয়েছে, একটি দু'হাজার টাকার নোটের মোট আয়তন ১০৯.৫৬ বর্গ সেন্টিমিটার। নোটটি যদি ছিঁড়ে যায়, তাহলে তার বিনিময়ে পুরো দু'হাজার টাকা পেতে হলে টাকার মূল অংশের আয়তন হতে হবে ৮৮ বর্গ সেন্টিমিটার। তার নীচে হলেই মিলবে মাত্র হাজার টাকা। ছেঁড়া অংশটি যদি ৪৪ বর্গ সেন্টিমিটারের বেশি হয়, তাহলে কোনও টাকা পাবেন না গ্রাহক। আসা যাক ৫০০ টাকার নোটের কথায়। এই নোটের আয়তন ৯৯ বর্গ সেন্টিমিটার। সেটি যদি ছিঁড়ে যায়, তাহলে ছেঁড়া অংশটি বাদে বাদবাকি অংশের আয়তন হতে হবে ৮০ বর্গ সেন্টিমিটার। তবেই পাওয়া যাবে পাঁচশো টাকা। তার নীচে হলে মিলবে ২৫০ টাকা। আর ৪০ বর্গ সেন্টিমিটারের নীচে আয়তন হলে, ওই নোটের বিনিময়ে কোনও টাকা মিলবে না। প্রশ্ন হল, কোনও ব্যক্তি যদি একই নোটের দু'টি টুকরো ব্যাঙ্কে জমা করেন, যেগুলি যোগ করলে তো একটি আস্ত ও অভিন্ন নোট হতে পারত, সেক্ষেত্রে কি পুরো টাকা পাবেন গ্রাহক? আরবিআইয়ের ২০০৯ সালের যে নির্দেশিকা ছিল, তাতে বলা হয়েছিল, এক্ষেত্রে পুরো টাকা ফেরত পাবেন গ্রাহক। কিন্তু তা পুরনো ৫০০ ও হাজার টাকার নোটের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ছিল। যেহেতু নতুন নির্দেশিকায় নতুন নোটে তা স্পষ্ট নেই, সেক্ষেত্রে পুরনো নীতিই প্রযোজ্য হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, ৫০ টাকা থেকে দু'হাজার টাকার নোট বদলের ক্ষেত্রে এই নতুন নিয়ম প্রযোজ্য হবে। অর্থাৎ ৫০০ এবং দু'হাজার টাকার নোটের মতোই ৫০, ১০০ এবং ২০০ টাকার নোট ২০ শতাংশ ছিঁড়ে দু'টুকরো হলে আর পুরো টাকা পাওয়া যাবে না। তার নীচের অঙ্কের নোটের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশের বেশি ছিঁড়ে গিলে কোনও টাকাই পাওয়া যাবে না। তার চেয়ে কম ছিঁড়লে পুরো টাকা পাওয়া যাবে, জানিয়েছে আরবিআই।