আইএসআইয়ের ‘মধুচক্রের ফাঁদে’ পা দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নথি পাচার, বিএসএফ জওয়ান গ্রেফতার


লখনউ: মধ্যপ্রদেশের রেওয়ার বাসিন্দা অচ্যুতানন্দ মিশ্র নামে এক বিএসএফ জওয়ান পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের এজেন্টদের গুরুত্বপূর্ণ নথি পাচারের অভিযোগে নয়ডা থেকে গ্রেফতার। উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ডিজিপি সিংহ বলেন, অচ্যুতানন্দকে মধুচক্রের ফাঁদে ফেলে তার কাছ থেকে তার ইউনিটের কাজকর্ম সম্পর্কে বিস্তারিত নথি, পুলিশ অ্যাকাডেমি ও ট্রেনিং সেন্টারের নানা খবরাখবর বের করে নিয়েছে নিজেকে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত রিপোর্টার বলে দাবি করা এক মহিলা। বিবাহিত, ২ টি বাচ্চার বাবা ওই জওয়ানকে নয়ডায় সোম ও মঙ্গলবার জেরা করে এটিএস ও বিএসএফ অফিসাররা জেনেছেন, প্রাথমিকভাবে সরকারি তথ্য গোপনীয়তা রক্ষা আইনে অপরাধ করার মতো পর্যাপ্ত প্রমাণ মিলেছে অচ্যুতানন্দের বিরুদ্ধে।

ডিজিপি জানান, ২০০৬ সালে তাকে বিএসএফে রিক্রুট করা হয়, ২০১৬-য় ওই মহিলার সংস্পর্শে আসে সে। কিছুদিন পর থেকেই ইউনিটের লোকেশন, বিএসএফ ক্যাম্পের ছবি, অস্ত্রশস্ত্রের ভান্ডারের বিস্তারিত নথিপত্র তার হাতে তুলে দেওয়া শুরু করে সে। তারপর পাকিস্তানে নথিভুক্ত একটি ফোন নম্বরে সে হোয়াটসঅ্যাপে চ্যাট করতে থাকে। সেই কথোপকথনের বিস্তারিত তথ্য থেকে ইঙ্গিত, তাকে ধর্মান্তরকরণ ও কাশ্মীর নিয়েও প্রভাবিত করা হচ্ছিল। পাকিস্তানি ফোন নম্বরটি নিজের মোবাইলে সে পাকিস্তানি দোস্ত বলে সেভ করে রেখেছিল। 
অপরাধ কবুল করেছে অচ্যুতানন্দ, তার ফোন ও ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকেও একাধিক সাইবার সংক্রান্ত নথিপত্র মিলেছে বলে খবর। ডিজিপি জানান, সরকারি তথ্য গোপনীয়তা আইনের ৩, ৪, ৫, ৯ ধারা ও তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৬৬ডি ধারা, ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২১ এ আইনে উল্লিখিত অপরাধের পর্যায়ে পড়ে ওর কাজকর্ম। সে নানা ছবি, ভিডিও পাচার করেছে। জিজ্ঞাসাবাদ করতে তাকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার জন্য লখনউ আদালতে তোলা হবে।

এই নেটওয়ার্কে তার সঙ্গে আর কারা ছিল, কীসের তাগিদে সে গোপনীয় নথি পাচার করল, এজন্য সে টাকাপয়সা পেয়েছে কিনা, সব খতিয়ে দেখা হচ্ছে, তার অ্যাকাউন্টও পরীক্ষা করা হবে বলে জানান ডিজিপি। ঠিক কোন কোন তথ্য সে পাচার করেছে, তার ফলে কতটা ক্ষতি হয়েছে, তাও যাচাই করা হচ্ছে। 
প্রসঙ্গত, পাক গুপ্তচর সংস্থা ফেসবুকের মাধ্যমে ভারতীয় সেনা ও আধাসামরিক জওয়ানদের মধুচক্র, প্রেমের ফাঁদে জড়িয়ে ফেলছে বলে আগেই শোনা গিয়েছে। চন্ডীগড়ের সামরিক গুপ্তচর শাখা কিছুদিন আগে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের এটিএসকে একটি ভুয়ো সোস্যাল মিডিয়া প্রোফাইল সম্পর্কেও সতর্ক করেছিল।