মূল দায় পূর্ত দফতরেরই, মানলেন মমতা, ভেঙে ফেলা হবে মাঝেরহাট ব্রিজ


মাঝেরহাটের ভাঙা সেতুর বাকি অংশ সম্পূর্ণ ভাবে ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। শুক্রবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন।

সেতু ভাঙার পর পরই মুখ্যমন্ত্রী মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছিলেন। সেই কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দেন। সেই কমিটির দেওয়া প্রাথমিক রিপোর্টের ভিত্তিতেই এই সিদ্ধান্ত।

এ দিন মমতা স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, এই সেতু বিপর্যয়ের পেছনে পূর্ত দফতর তাদের দায় এড়াতে পারে না। পাশাপাশি তিনি মেট্রো প্রকল্পকেও দায়ী করেছেন গোটা ঘটনায়। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেন, ''পূর্ত দফতের গাফিলতি ছিল। ক্ষমা নিশ্চয়ই করব না। ফাইল চালাচালি করতে দেরি হয়ে গিয়েছে। পূর্ত দফতর দায়িত্ব অস্বীকার করতে পারে না। পুলিশ তদন্ত করছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'' পাশাপাশি তিনি বলেন, ''মেট্রোর নির্মাণ কাজের জন্য যে কম্পন হয়েছে তা-ও ওই সেতুর কাঠামোকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।'' মুখ্যমন্ত্রীএ দিন সময়সীমা বেঁধে দিয়ে বলেন, ''পুরনো সেতু ভেঙে ফেলে আগামী এক বছরের মধ্যে ওই জায়গায় নতুন সেতু তৈরি করা হবে।''

মুখ্যমন্ত্রী এ দিন জানিয়ে দেন, ২০১৬ সাল থেকেই ৫৪ বছরের পুরনো ওই সেতুর প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণের অভাব ছিল। তার দায় অবশ্যই বর্তায় রাজ্য সরকারের পূর্ত দফতরের উপর। তাঁর দাবি, পূর্ত দফতরের আধিকারিকরা আগেই রিপোর্ট পেয়েছিলেন ওই সেতুর বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে। মমতার প্রশ্ন,তখন তা হলে তাঁরা ব্যবস্থা নিলেন না কেন? মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ''প্রাথমিক রিপোর্ট আমরা পেয়েছি। এক মাসের মধ্যে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেবে এই কমিটি। সেই রিপোর্টেই নির্দিষ্ট হবে ঠিক কার কার এই গাফিলতিতে দায় রয়েছে। তাঁদের চিহ্নিত করা হবে।যাঁরা দায়িত্বে ছিলেন তাঁরা কেউ ছাড় পাবেন না। তাঁদের শাস্তি হবে। তাঁদের দায়িত্ব নিতে হবে।''

এক বছরের মধ্যে ওই ভাঙা সেতুর জায়গায় নতুন সেতু বানানো কতটা সম্ভব তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক পার্থপ্রতিম বিশ্বাসবলেন, "পুরনো সেতুর অ্যালাইনমেন্ট অর্থাৎ সেই এক বরাবর যদি নতুন সেতু বানানো হয় তাহলে এক বছরে কাজ শেষ করা অসম্ভব নয়। কিন্তু সমস্যা একটি রয়েছে। কারণ এটি শহরের ব্যস্ত এলাকা। সেখানে সেতু তৈরির ভারি যান বাহন এবং প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি এনে তা নিয়ে দ্রুত কাজ করা সম্ভব নয়। জনবহুল এলাকায় এ ধরনের নির্মাণ কাজ সেই কারণেই অনেক শ্লথ হয়ে যায়।"