২৬ বছর ধরে এই মন্দিরের দেখাশোনা করছেন মুসলিমরা


বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পরপরই বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছেন হিন্দু মালিকরা। রয়ে গিয়েছে মন্দির। সেই মন্দিরকেই সযত্নে বাঁচিয়ে রেখেছেন প্রতিবেশী মুসলিমরা। ২৬ বছর ধরে অভূতপূর্ব সম্প্রীতির নজির গড়ে উঠেছে মুজফফরনগরে। 

মুসলিম অধ্যুষিত লাডডেহওয়ালার সেই মন্দির প্রতিদিন ধোয়া-মোছা হয়। প্রতি দিওয়ালিতে হয় হোয়াইটওয়াশ। কোনও রাস্তার কুকুর-বিড়াল যাতে মন্দিরে ঢুকে পড়তে না-পারে, সেদিকেও রয়েছে তীক্ষ্ণ নজরদারি। ৬০ বছরের মেহেরবান আলি এখনও স্মৃতি রোমন্থন করেন। তাঁর হিন্দু প্রতিবেশীদের কথা বলতে গিয়ে বললেন, 'আমার খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল জিতেন্দ্র কুমার। সাম্প্রদায়িক হিংসার সময় আমি ওকে বাড়ি না-ছাড়ার জন্য অনুরোধ করেছিলাম। তবে পরিবারের সুরক্ষার কথা ভেবে সবাইকে নিয়ে অন্যত্র চলে যান তিনি। বলে যান, আবার একদিন ফিরে আসবেন। সেদিন থেকে এখানকার বাসিন্দারা মন্দিরটার দেখাশোনা করেন।'

ওই এলাকায় থাকেন ৩৫ টি মুসলিম পরিবার। এছাড়াও ছিল প্রায় ২০টি হিন্দু পরিবার। ১৯৭০ সালে তৈরি হয়েছিল মন্দিরটি। তবে এখন তাতে বিগ্রহ নেই। এক হিন্দু পরিবার যাওয়ার সময় বিগ্রহটি নিয়ে গিয়েছিলেন। আলির মতোই অনেকেই আশায় আছেন, তাঁদের হিন্দু প্রতিবেশীরা ফের ফিরে আসবেন। আর মন্দিরটির দায়িত্ব নেবেন। মন্দিরটি দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা গুলজার সিদ্দিকির কথায়, 'এখন এখানে কোনও হিন্দু পরিবার থাকে না। তবে তাঁদের উপাসনার জায়গাটি যদি আমরা নষ্ট হতে দিই, তাহলে ওঁরা আমাদের উপর আস্থা হারাবে। আমরা সেটা চাই না। সে জন্যই মন্দিরটির দেখাশোনা করি।'