ঢুকছে না জেসিবি, হাতে হাতেই ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে চলছে প্রাণের খোঁজ


মাঝেরহাট ব্রিজের ভেঙে পড়া অংশের এক দিকে চলছে মেট্রোর কাজ। অন্যদিকে খাল। ভেঙে পড়া অংশে কোনওভাবেই জেসিবি মেশিন ঢোকানো যাচ্ছে না। সেই কারণেই উদ্ধার কাজে দেরি হচ্ছে। তবু এনডিআরএফ কর্মীরা খোঁজ চালিয়ে যাচ্ছেন। সকালে ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেছেন রাইটসের প্রতিনিধিরা।

মাঝেরহাট ব্রিজের ভেঙে পড়া মাঝের অংশের ধ্বংসস্তূপের নীচে এখনও কেউ আটকে আছেন কি-না, সবচেয়ে বড় হয়ে দেখা দিয়েছে সেই প্রশ্ন। সেই প্রশ্নের নিশ্চিত উত্তর হয়তো এতক্ষণে দিয়ে দিতে পারতেন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দলের (ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স বা এনডিআরএফ) কর্মীরা। কিন্তু ভেঙে পড়া অংশে এমন এক পরিস্থিতি, যাতে হাতে হাতে কাজ করা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। ধ্বংসস্তূপের কাছে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না জেসিবি মেশিন।

ধ্বংসস্তূপ সরাতে এনডিআরএফ-এর হাতিয়ার এখন ইলেক্ট্রিক ডিল মেশিন। সেই যন্ত্র দিয়ে ব্রিজের চাঙড়ের উপর বড় বড় গর্ত করে নীচে উঁকি দিয়ে দেখছেন তাঁরা। খোঁজার চেষ্টা করছেন, নীচে কেউ আটকে আছেন কি না। এছাড়া ভেঙে পড়া ব্রিজের চাঙড়গুলি ছোট ছোট করে ভেঙে কিছুটা সরিয়ে ফাঁকা করেও দেখা হচ্ছে।

কিন্তু এনডিআরএফ কর্মীদের আক্ষেপ, জেসিবি মেশিন ধ্বংসস্তূপের কাছে নিয়ে যেতে পারলে আরও তাড়াতাড়ি পরিষ্কার করা যেত। সে উপায় নেই, কারণ ভাঙা ব্রিজের পশ্চিম দিকে মেট্রোর কাজ চলছে। আর পূর্ব দিক বরাবর গিয়েছে খাল। আবার ব্রিজের উপর দিয়ে জেসিবি নিয়ে গিয়েও সেখানে নামানো সম্ভব নয়। কিন্তু এই যন্ত্র নিয়ে যেতে পারলে বিশাল বিশাল চাঙড় হলেও অল্প সময়ের মধ্যেই সরিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হত। চোখে দেখে উত্তর মিলত, নীচে কেউ আটকে আছেন কি না।

এনডিআরএফ কর্মীরা জানাচ্ছেন, সারা রাত ছোট ছোট অংশে ভেঙে চাঙড়গুলি সরিয়ে পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। চারটি প্রশিক্ষিত কুকুর নিয়ে আসা হয়। তারা প্রাথমিক ভাবে নীচে কেউ আটকে থাকতে পারেন বলে ইঙ্গিতও দিয়েছিল। কিন্তু সারা রাত এবং সকালে খুঁজেও কারও সাড়া মেলেনি। এমনকি, কেউ আটকে আছেন, এমন ইঙ্গিতও মেলেনি।

অন্যদিকে, বুধবার সকালেই ভাঙা অংশ-সহ প্রায় গোটা ব্রিজটিই খতিয়ে দেখেছেন রাইটসের প্রতিনিধিরা। কেন্দ্রীয় এই সংস্থা পরিকাঠামো, সড়ক পরিবহণ-সহ নানা বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে থাকে। পরিকাঠামো বা রক্ষণাবেক্ষণে কোনও ত্রুটি ছিল কি না, তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বোঝার চেষ্টা করেন এই সংস্থার আধিকারিকরা। তবে সংবাদ মাধ্যমে তাঁরা কোনও মন্তব্য করতে চাননি।