মেট্রোকে কাজ শুরু করতে বলবে রাজ্য


মাঝেরহাটে সেতুভঙ্গের অভিঘাতে জোকা-বি বা দী বাগ মেট্রো প্রকল্পের কাজ তদন্তের জন্য বন্ধ রাখার কথা বলেছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু এ বার মেট্রোর কাজ ফের শুরু করতে বলে রেলকে চিঠি দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

ফ্রাঙ্কফুর্টে সফরসঙ্গী সাংবাদিকদের মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ''ফরেন্সিক তদন্তের জন্য মেট্রোর কাজের একটা অংশ কিছু দিন বন্ধ রাখতে বলা হয়েছিল। কিন্তু আমরা চাই, উন্নয়নের কাজ যেন থমকে না থাকে। সেই কারণে মেট্রো রেল তৈরির কাজ ফের শুরু করতে বলা হবে। ইতিমধ্যেই কাজ শুরুর জন্য নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। মুখ্যসচিব চিঠি মারফত তা রেলকে জানিয়ে দেবেন।'' তবে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, মেট্রোর কাজের জন্য মাঝেরহাট সেতু নতুন করে গড়তে অসুবিধা যাতে না হয়, সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। আবার মাঝেরহাটের পুরনো সেতু ভাঙা বা নতুন সেতু গড়ার কাজের জন্য মেট্রোর কাজে ব্যাঘাত ঘটানোও চলবে না। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ''পারস্পরিক বোঝাপড়া জরুরি। আমি দীর্ঘদিন রেল মন্ত্রকে কাজ করেছি। তাই মেট্রো বা রেলের কাজে ব্যাঘাত ঘটুক, কখনও চাইব না।''

দুর্ঘটনার জেরে মাঝেরহাট সেতু বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দক্ষিণবঙ্গ ও শহরতলির 'লাইফলাইন' যে থমকে রয়েছে, তা নিজেই উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা হচ্ছে। রেলের সঙ্গে সমন্বয়ও বাড়ানো হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ''রেলকে অনুরোধ করেছি, একটা আলাদা সিগন্যালিং ব্যবস্থা (মাঝেরহাটে) করে দিতে। গার্ডেনরিচ উড়ালপুল ইতিমধ্যেই খুলে দিয়েছি। মহেশতলা ব্রিজও যত তাড়াতাড়ি সম্ভব খুলে দেওয়ার বন্দোবস্ত করব। এই সব কিছু হয়ে গেলে সাধারণ মানুষের কিছুটা সুরাহা হবে।''

মুখ্যমন্ত্রী এ দিন ব্যাখ্যা দিয়েছেন, মাঝেরহাট সেতু সারাতে হবে পিলার তৈরি করে। প্রথমে ভেঙে তার পরে পিলার তৈরি করে বাকি কাজ সম্পন্ন করতে সময় লাগবে। তবু যথাসম্ভব দ্রুত কাজ এগোনোর চেষ্টা হবে। তাঁর বক্তব্য, বহু সেতুই তৈরির সময়ে যে ভার বহনের কথা ভাবা হয়েছিল, তার চেয়ে চাপ অনেক বেড়ে গিয়েছে। এখন সব সেতুর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য রাজ্য সরকার একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করছে। যাতে সেতুর স্বাস্থ্য নিয়মিত পরীক্ষা, রক্ষণাবেক্ষণ ও যত্নে কোনও ত্রুটি না থাকে। জেলায় জেলায় পঞ্চায়েত বা জেলা পরিষদ অনেক সেতু তৈরি করে। কিন্তু সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, এখন থেকে ৫০ মিটারের বেশি লম্বা যে কোনও সেতু পূর্ত দফতরই তৈরি করবে। অর্থাৎ একেবারে ছোট কোনও সেতু ছাড়া অন্য প্রায় সব সেতুই তৈরির দায়িত্ব বর্তাবে পূর্ত দফতরের উপরে।

লগ্নি-সফরে এসেও রাজ্যে সাধারণ মানুষের দুর্দশার দিকে যে মন পড়ে রয়েছে, বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই। তাঁর কথায়, ''এখানে মুখ্যসচিব, অর্থমন্ত্রী, অর্থসচিব— এঁরা সকলেই রয়েছেন। প্রশাসনিক বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। এই যেমন আমরা জানি, মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়ায় সাধারণ মানুষের কষ্ট হচ্ছে। দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তার জন্য আমরা ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।''