কানাডায় চাকরি দেওয়ার নাম করে 40 লক্ষ টাকা প্রতারণা।

কলকাতায় বসেই চাকরি মিলবে কানাডার। তার জন্য শুধু খরচ করতে হবে কিছু টাকা। এভাবেই ফাঁদ পেতেছিলেন শহরের দুই মহিলা। তাঁদের ফাঁদে পা দিয়েছিলেন শহরের বেশ কিছু যুবক। অভিযোগ, ৪০ লাখ টাকা উধাও করে গা-ঢাকা দেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত বর্ণালী বিশ্বাস ও সুদীপা সাহা নামে দুই মহিলাকে প্রতারণার অভিযোগে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পুলিশ জানিয়েছে, জওহরলাল নেহরু রোডের উপর একটি নামী বহুতলের ১১ তলায় 'প্লেসমেন্ট'-এর অফিস খোলেন দুই মহিলা। বর্ণালী নিজের পরিচয় দেন সংস্থার মালকিন ও সুদীপা নিজেকে ম্যানেজার বলে পরিচয় দেন। বিভিন্ন জায়গায় বিজ্ঞাপন দিতে শুরু করেন তাঁরা।

বলা হয়, কানাডায় মিলবে আকর্ষণীয় চাকরি। শুধু তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করলেই হল। এই ফাঁদে পা দেন বেশ কয়েকজন যুবক। তাঁদের চাকরির জন্য একটি ফর্ম ভরে আবেদন করতে বলা হয়। এরপর চাকরিপ্রার্থীদের মহিলারা বলেন, কয়েক লাখ টাকা আগাম জমা রাখতে হবে অফিসে। কানাডায় চাকরি করলে এত টাকা বেতন পাওয়া যাবে যে, কেউ ঋণ নিয়ে ওই টাকা নিলেও সহজে তা ফেরত দিতে পারবেন। এই কথায় বিশ্বাস করে কোনও কোনও চাকরিপ্রার্থী নিজেদের সারা জীবনের সঞ্চয় তাদের দিয়ে দেন। কেউ বা জমি ও বাড়ি বন্ধক রেখে টাকা জোগাড় করে চাকরি পাওয়ার আশায় মহিলাদের হাতে টাকা তুলে দেন। কিন্তু টাকা নেওয়ার পরই তাদের রূপ পালটে যায়। আবেদনপত্রে ভুল দেখিয়ে জানানো হয়, এখনই তাঁকে কানাডায় পাঠানো সম্ভব নয়। কিন্তু টাকা চাইতে গেলেই তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। ফলে তাঁরা কানাডায় যেতেও পারেননি, আবার টাকাও তাঁদের ফেরত দেওয়া হয়নি।

এর পরই শেক্সপিয়র সরণি থানায় অভিযোগ জমা পড়তে থাকে। পুলিশ খোঁজ চালিয়ে মোট ১৬ জন চাকরিপ্রার্থীকে খুঁজে পায়, যাঁদের কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকার বেশি প্রতারণা করা হয়েছে। অভিযোগের পর অফিস বন্ধ করে দুই মহিলা গা-ঢাকা দেন। পুলিশ মোবাইল ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সূত্র ধরে তদন্ত চালিয়ে দু'জনকেই গ্রেপ্তার করে। তাঁদের জেরা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। প্রতারণার জাল আরও গভীরে নাকি শুধু এই দুই মহিলায় এ ধরণের ফাঁদ পেতেছিল তা জানতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।