৭৩ ছাড়াল ডলার, টাকা গভীর খাদে


তেলের দাম বৃদ্ধি ও টাকার পতন নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে ক্রমাগত বিঁধে চলেছেন বিরোধীরা। ভোটের আগে মূল্যবৃদ্ধির উপরে তেলের দামের নেতিবাচক প্রভাব পড়লে সরকারের অস্বস্তি আরও বাড়বে। অন্য দিকে, টাকার পতনে বাড়তে পারে চলতি খাতে ঘাটতি। এই অবস্থায় টাকার পতন ও চলতি খাতে ঘাটতি কমাতে নানা পরিকল্পনা করছে কেন্দ্র। বিষয়গুলি নিয়ে বৃহস্পতিবার বিভিন্ন মন্ত্রকের সঙ্গে বৈঠক করবেন বাণিজ্যমন্ত্রী সুরেশ প্রভু। কিন্তু ঠিক তার আগে বুধবার ডলারের নিরিখে সর্বনিম্ন দামে পৌঁছে গেল টাকা। এই নিয়ে টুইটারে ছড়া কেটে কেন্দ্রকে কটাক্ষ করেছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। 

এ দিন ১ ডলারের দাম ৪৩ পয়সা বেড়ে হয়েছে ৭৩.৩৪ টাকা। একটা সময়ে তা পৌঁছে গিয়েছিল ৭৩.৪২ টাকায়। সোমবারও ডলারের ৪৩ পয়সা বেড়েছিল। মঙ্গলবার বন্ধ ছিল বাজার। এ দিন লেনদেনের শুরু থেকেই ফের টাকা পড়তে থাকে। ২০১৮ সালেই মার্কিন মুদ্রার তুলনায় টাকা পড়েছে ১৪.৮%। অন্য দিকে, এ দিনই ব্যারেল প্রতি অশোধিত তেলের দাম ৮৫ ডলার পার করেছে। 

অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, অশোধিত তেলের দাম বাড়ায় আমদানি খরচ আকাশ ছোঁয়ার আশঙ্কা। আবার সম্প্রতি মার্কিন শীর্ষ ব্যাঙ্ক সুদ বাড়ানোয় ডলার হয়েছে শক্তিশালী। এই অবস্থায় তার চাহিদা বাড়ায় ধাক্কা খাচ্ছে টাকা। আবার শুক্রবার সুদ ঘোষণার জন্য বৈঠকে বসেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি কমিটি।



কিন্তু বাজার সূত্রের খবর, টাকার পতন ঠেকাতে এ দিন শীর্ষ ব্যাঙ্ক শুরুতে ব্যবস্থা নেয়নি। পরে অবশ্য তেল সংস্থাগুলির বিদেশ থেকে ডলারে ধার নেওয়ার বিধি কিছুটা শিথিল করেছে। কিন্তু লেনদেন চলাকালীন লগ্নিকারীদের প্রত্যাশা ধাক্কা খাওয়ায় ক্রমাগত পড়েছে টাকা।

ডলারের পোয়াবারো 
• ১ ডলার: ৭৩.৩৪ টাকা
• বেড়েছে: ৪৩ পয়সা
• দিনের সর্বোচ্চ: ৭৩.৪২ টাকা
• আগের দিন: ৭২.৯১ টাকা
• এ বছর টাকার পতন: ১৪.৮%

কারণ 
• অশোধিত তেলের দাম বৃদ্ধি ও শেয়ার সূচকের পতন
• মার্কিন শীর্ষ ব্যাঙ্ক সুদ বাড়ানোয় ডলার শক্তিশালী
• রিজার্ভ ব্যাঙ্ক হস্তক্ষেপ না করায় নেতিবাচক প্রভাব


ভবিষ্যতে আশঙ্কা 
• তেল আমদানির খরচ বাড়ার ফলে চলতি খাতে ঘাটতি বৃদ্ধি
• বাড়তে পারে মূল্যবৃদ্ধি

সুবিধা কাদের 
• তথ্যপ্রযুক্তি, ওষুধ ইত্যাদি শিল্পে
• রফতানি ব্যবসার


এই পরিস্থিতিতে রক্তচাপ বাড়ছে কেন্দ্রের। আপাতত অত্যাবশ্যকীয় নয় এমন সমস্ত পণ্যের আমদানি কমিয়ে রফতানি বাড়নো ছাড়া গতি নেই বলেই মনে করছে তারা। এ বিষয়ে আলোচনার জন্য তেল, কয়লা, ইস্পাত, ওষুধের মতো মন্ত্রকগুলির সঙ্গে বৈঠক করবেন বাণিজ্যমন্ত্রী।