নেটফ্লিক্স ‘ভাইরাসে’ আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা শুরু ভারতে


কোম্পানির নিজস্ব তথ্য অনুযায়ী একজন ব্যবহারকারী প্রতিদিন প্রায় ৫০ মিনিট সময় ব্যায় করে থাকেন।

অবসাদ বা অবসর সময় কাটাতে দীর্ঘসময় কাটাচ্ছেন নেটফ্লিক্সে? তাহলে আপনিও আসক্ত হয়ে পড়েছেন মারাত্মক ব্যাধিতে। সম্প্রতি এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, নেটফ্লিক্সের মারণফাঁদে পা দিয়েছেন বহু নেটিজেনরা। ওয়েব সিরিজ বহুক্ষণ আটকে রাখছে তাঁদের।

এবার এমন একজন ভারতীয় নেটিজেন পাওয়া গেছে যিনি গড়পড়তা সাত ঘণ্টা সময় কাটাচ্ছিলেন নেটফ্লিক্সে, এই ধরণের প্ল্যাটফর্মের স্ট্রিমিং শোতে এতটাই আসক্ত হয়ে পড়েন তিনি। গত সপ্তাহে বেঙ্গালুরু ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড নিউরোসায়েন্সেস-এ চালু হয়েছে সার্ভিস ফর হেলথ ইউজ টেকনোলজি (SHUT)। যার আওতায় নেটফ্লিক্সে আসক্ত রোগীদের চিকিৎসা করা হবে। গত সপ্তাহেই ২৬ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির চিকিৎসা করা হয়। রোগী নিজেই অকপটে স্বীকার করেছেন, ছ'মাস ধরে দীর্ঘ সময় নেটফ্লিক্সে ব্যয় করতেন তিনি। যার ফলে রুটিন মাফিক জীবন থেকে সরে গিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। ক্লান্তি, চোখের অতিরিক্ত স্ট্রেন, এবং অনিয়মিত ঘুমের কারণে একাধিক অসুস্থতা দেখা দিয়েছিল। সে কারণে তাঁর পুনর্বাসন প্রয়োজন হয়ে পড়ে।

SHUT ক্লিনিকের প্রধান ডাক্তার মনোজ কুমার শর্মা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বেকারত্বে থাকলে যে অবসাদ বা দুশ্চিন্তার প্রসার ঘটে, তা এই ধরণের ওয়েব সিরিজ দেখার ফলে খানিকটা সময়ের জন্য কেটে যায়। যার ফলে এই ধরণের অ্যাপের প্রতি আরও বেশি করে আসক্ত হয়ে পড়েন তাঁরা।

ডাক্তার মনোজ কুমার শর্মা বলেন, যখনই ওই ব্যক্তির পরিবার তাঁকে চাকরি করার জন্য চাপ দিত, অথবা যখন তিনি দেখতেন তাঁর বন্ধুরা ভাল কেরিয়ার গড়ে নিয়েছেন, তখন তাঁকে আরও অবসাদ ঘিরে ধরত। এসব থেকে বাঁচার উপায় হিসেবে তিনি খুঁজে নিয়েছিলেন নেটফ্লিক্সকে।

স্পষ্টতই, নেটফ্লিক্সে অনেকেই সময় ব্যয় করেন, কারণ প্রযুক্তিগত ভাবে ইন্টারনেটের পনেরো শতাংশ ডাউনস্ট্রিম ট্র্যাফিকের জন্য। কোম্পানির নিজস্ব তথ্য অনুযায়ী, একেকজন ব্যবহারকারী প্রতিদিন প্রায় ৫০ মিনিট সময় ব্যয় করে থাকেন। নেটফ্লিক্স কীভাবে মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে সে সম্পর্কে বর্তমানে রয়েছে নানা মুনির নানা মত। যদি আপনিও এই ফাঁদে পা দিয়ে থাকেন তাহলে যত শীঘ্র সম্ভব এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

বর্তমানে কতক্ষণ ভিডিও দেখছেন, বা কতক্ষণ ব্যবহার করছেন ফেসবুক, তা জানার জন্য অ্যাপ সংস্থারা নিয়ে আসছে নতুন ফিচার। যেখানে আপনার ব্যবহারের সময় দেখা যাবে। যেমন ইউটিউব এই বছরের প্রথম দিকে অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের জন্য 'টেক অ্য ব্রেক' ফিচার চালু করেছে। ব্যবহারকারীরা প্রতি ১৫, ৩০, ৬০, ৯০, বা ১৮০ মিনিটের পরে রিমাইন্ডার নোটিফিকেশন সেট করতে পারবেন এই ফিচারের মাধ্যমে, যার ফলে রিমাইন্ডার নোটিফিকেশন এলে পরে তা তৎক্ষণাৎ স্নুজ, স্কিপ বা বন্ধ করতেও পারবেন আপনি। ইতিমধ্যে নেটফ্লিক্সও এই সমস্যা দূর করতে উদ্যোগ নিয়েছে।