কুকুরের কাছে ক্ষমা না চাওয়ায় যুবককে পরপর ছুরি মেরে খুন


ধাক্কা মারায় কুকুরের কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি, না মানায় যুবককে খুন।

গাড়ি ধাক্কা মেরেছিল পোষা কুকুরকে। মালিকের দাবি, পোষ্যের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। রাজি না হওয়ায় যুবককে পরের পর ছুরি মেরে খুন করল পোষ্যের মালিক দুই ভাই ও তাঁদের ভাড়াটিয়া। বাঁচাতে আসায় নিহতের দাদাকেও পর পর ছুরি ঢুকিয়ে দিল অভিযুক্তরা। তিনি মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। এমনই রোমহর্ষক ঘটনা ঘিরে শনিবার মধ্যরাতে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়াল দক্ষিণ পশ্চিম দিল্লির উত্তম নগর এলাকার মোহন গার্ডেন এলাকায়। নিহতের নাম বিজেন্দ্র রানা (৪৫)। অভিযুক্ত অঙ্কিত, পরশ এবং তাঁদের ভাড়াটিয়া দেব পলাতক। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।
কী ঘটেছিল শনিবার মধ্যরাতে?
গভীর রাতে রাস্তাঘাট কার্যত শুনশানই ছিল। মোহন গার্ডেন এলাকার বাসিন্দা দুই ভাই অঙ্কিত, পরশ এবং তাঁদের ভাড়াটিয়া দেব খোশগল্প করছিলেন। সঙ্গে ছিল অঙ্কিত-পরশদের পোষা একটি কালো রঙের একটি ল্যাব্রাডার। সেই সময় বিজেন্দ্র রানা নিজের টেম্পো নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। ফাঁকা রাস্তায় গাড়ি আসতে দেখে ছুটে যায় সেই পোষা কুকুর। তাতে বিজেন্দ্রর টেম্পোতে কুকুরটির গায়ে সামান্য ধাক্কা লেগে যায়।

কুকুরের চিৎকার শুনে ছুটে এসে আসেন অঙ্কিতরা। অভিযোগ, বিজেন্দ্রকে চুল ধরে গাড়ি থেকে নামিয়ে কুকুরের কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি করেন তিন জন। কিন্তু বিজেন্দ্র রাজি না হয়ে উল্টে কুকুরকেই সাবধানে রাখতে বলেন। তিন জনের হাত থেকে কোনওরকমে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বাড়ির দিকে দৌড়ে পালাতে শুরু করেন।

এই 'ঔদ্ধত্য' সহ্য হয়নি অঙ্কিতদের। প্রায় ৫০ মিটার দূরে গিয়ে তাঁকে ধরে ফেলেন তিন জন। টেনে হিঁচড়ে ঘটনাস্থলের কাছে নিয়ে আসেন। শুরু হয় মারধর। তার মধ্যেই তাঁকে পর পর বেশ কয়েকবার ছুরি ঢুকিয়ে দেন অভিযুক্তদের এক জন। পেটে স্ক্রু ড্রাইভার ঢুকিয়ে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। ঘটনাস্থলেই রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন বিজেন্দ্র। সাহায্যের জন্য আর্তনাদ করতে থাকেন।

ভাইয়ের চিৎকার শুনে ছুটে আসেন দাদা রাজেশ। বছর পঁয়তাল্লিশের রাজেশকেও পর পর ছুরি মেরে পালিয়ে যায় অভিযুক্তরা। পরে বিজেন্দ্র ও রাজেশকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে বিজেন্দ্রকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। তাঁর দাদা রাজেশ দীন দয়াল উপাধ্যায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হাসপাতাল সূত্রে খবর, তাঁর অবস্থা সঙ্কটজনক।
ঘটনাস্থলের কাছেই একটি সিসিটিভি ফুটেজ পেয়েছে পুলিশ। সেই ফুটেজ খতিয়ে দেখে তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, বিজেন্দ্রকে ছ'বার এবং রাজেশকে তিন বার ছুরি মারা হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই পালিয়ে গিয়েছে অভিযুক্তরা। খুব শীঘ্রই তাঁদের গ্রেফতার করা যাবে বলে আশাবাদী পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের অনুমান, অভিযুক্তরা প্রত্যেকেই মদ্যপ ছিল।