সিরিয়াতেই কি মৃত্যু বাঙালি জঙ্গি সিদ্ধার্থ ধরের?


এ বছরের গোড়াতেই আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের তালিকায় (গ্লোবাল টেররিজম লিস্ট) তার নাম অন্তর্ভুক্ত করেছিল মার্কিন প্রশাসন। 'জিহাদি সিড' বা আবু রুমায়শাহ নামে ইসলামিক স্টেট-এর সেই পরিচিত মুখ সিরিয়ায় সন্ত্রাসদমন অভিযানে মারা গিয়েছে বলে সম্প্রতি দাবি করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম। 'জিহাদি সিড'-এর আরও একটি পরিচয় অবশ্য আছে। তার আসল নাম সিদ্ধার্থ ধর। আড়াই বছর আগে বাঙালি এই আইএস জঙ্গির পাঁচ বন্দিকে নির্মম ভাবে হত্যার একটি ভি়ডিয়ো প্রকাশ পেয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে হইচই পড়ে যায়।

জন্মসূত্রে বাঙালি হলেও সিদ্ধার্থ ব্রিটিশ নাগরিক ছিল। বাবা-মা, দুই বোনের সঙ্গে উত্তর লন্ডনের পামার্স গ্রিন এলাকায় থাকত সে। সিদ্ধার্থের মৃত্যু নিয়ে অবশ্য তার পরিবারের প্রতিক্রিয়া এখনও পাওয়া যায়নি। 

ব্রিটিশ সন্ত্রাসদমন বিশেষজ্ঞ চার্লস লিস্টার সবার আগে টুইটারে সিদ্ধার্থের মৃত্যুর খবর প্রকাশ করেন। যদিও বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন ব্রিটিশ গোয়েন্দারা। তবে লন্ডনের এক কট্টরপন্থী ইসলাম শিক্ষক যিনি এক সময় সিদ্ধার্থের খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন, সেই আনজেম চৌধরিও একই সঙ্গে সিদ্ধার্থের মৃত্যুর খবর স্বীকার করেছেন। অমরনাথ অমরসিঙ্গম নামে আর এক সন্ত্রাসদমন বিশেষজ্ঞ টুইটারে জানিয়েছেন, আবু তুরাব নামে এক আইএস জঙ্গির থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সম্ভবত গত বছর সিরিয়ার রাকায় জঙ্গি দমন অভিযানে মৃত্যু হয় সিদ্ধার্থের। অভিযানে সম্ভবত মারা গিয়েছে সিদ্ধার্থের স্ত্রী-সন্তানেরাও। 

মুসলিম স্ত্রী আইশা তারিকের প্রেমে পড়েই সিদ্ধার্থ ধর্ম বদলেছিল বলে দাবি করেছিলেন ব্রিটিশ গোয়েন্দারা। যদিও সিদ্ধার্থের প্রতিবেশীরা জানিয়েছিলেন, তুরস্কের বেশ কিছু অভিবাসী পরিবারের সঙ্গে মিশে কট্টরপন্থার দিকে ঝোঁকে সে। বিভিন্ন নিষিদ্ধ সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার অভিযোগে তাকে একাধিক বার গ্রেফতারও করে লন্ডন পুলিশ। ২০১৪ সালে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নিয়ে প্যারিস হয়ে সিরিয়া পালায় সে। সিরিয়ায় থাকাকালীন এক হাতে রাইফেল আর অন্য হাতে এক সদ্যোজাতের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছিল সিদ্ধার্থ। ছবিটি নিয়েও প্রবল বিতর্ক হয়।