চোখে জল ,কাঁধে সন্তানের মৃতদেহ! উৎসবের দিনে উঠে এল আরও এক মর্মান্তিক ঘটনা


ছোট্ট ছোট্ট আঙুল দিয়ে বাবার হাত শক্ত করে ধরে , নতুন জামা পরে অনেকে খুদেই আজ ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছে। কিংবা বাবার কাছে প্রচণ্ড বায়না রয়েছে সন্ধ্যেবেলায় ঠাকুর দেখা আর বেলুন কিনে দেওয়ার! মেয়ের আবদার মেটাতে হয়তো অনেক বাবাই ভাবনায় পড়ে গিয়েছেন, এইভেবে যে উইক ডেজ-এ কীভাবে তাড়াতাড়ি অফিস থেকে বেরোবেন! এমনটাও তো হতে পারত বিহারের জামুইয়ের পাইজু মোহালির সঙ্গে! মেয়েকে নিয়ে উৎসবের আনন্দে তিনিও তো আজ মেতে উঠতে পারতেন! .. কিন্তু নিয়তি তা হতে দেয়নি। আর দারিদ্র তাতে আরও বড় কোপ বসিয়েছে।

ঘটনা বিহারের জামুইয়ের শিমূলতলার টোলবা গ্রামের। যেখানে এই উৎসবের দিনে এক অসহায় বাবাকে মৃত মেয়ের দেহ কাঁধে নিয়ে জোগাড় করতে হয়েছে সন্তানের সৎকারের টাকা। হ্যাঁ! 'উন্নয়নশীল' ভারতে এ দৃশ্য আবারও ফুটে উঠেছে, আর উস্কে দিয়েছে ওড়িশার দানা মাঝির স্মৃতি।

পাইজুর মেয়ে ববিতা কুমারী গত ১৫ -২০ দিন ধরে অসুস্থ। অসুস্থতার জেরে তাকে ঝাঝা রেফারাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পাইজুর অভিযোগস হাসপাতালে চিকিৎসার অভাবে ববিতার মৃত্যু হয়। শেষে অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে , মেয়ের মৃতদেহ কাঁধে তুলে টোলবা গ্রামের প্রধানের কাছে যানপাইজু। সেখান থেকে মেয়ের অন্ত্যেষ্টির টাকার জন্য় দ্বারস্থ হন গ্রাম প্রধানের কাছে। শেষমেশ গ্রামের প্রধান  ৩০০০ নগদ টাকা ও একটি অটোর ব্যবস্থা করে দেন। যে অটোয় মেয়ের মৃতদেহ নিয়ে গিয়ে সৎকারের ব্যবস্থা করে উঠতে পারেন পাইজু।

এই মর্মান্তিক ঘটনায় সন্তান হারা বাবা পাইজুর আর্তনাদ থামছে না। আর ঝাঝা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ক্রমাগত দাবি করে চলেছে ববিতার মৃত্যু হাসপাতালে হয়নি। হাসপাতাল থেকে বের করে নিয়ে যাওয়ার পর মৃত্যু হয় ববিতার। দোষ পাল্টা দোষের খেলা চলছেই। আর তারই মধ্যে ছোট্ট একটা প্রাণ নিঃশেষ হল। রেখে গেল বহু প্রশ্ন। রেখে গেল দায় দায়িত্বের প্রশ্ন, রেখে গেল দারিদ্রতা নিয়ে একটা বড়সড় বিস্ময়। প্রসঙ্গত,জমুইয়ের মুখ্য চিকিৎসাধিকারী মোহন দাসের দাবি, এই ঘটনা মানবিকতার প্রেক্ষিতে অত্যন্ত লজ্জাজনক একটি দিক।