বিএড-এর প্রশিক্ষণ নিয়ে প্রাথমিকে শিক্ষকতা করা যাবে না।


ব্যাচেলর অফ এডুকেশন (বিএড) প্রশিক্ষণ নিয়ে প্রাথমিকে শিক্ষকতা করা যাবে না। কেন্দ্রীয় সরকার চাপিয়ে দিলেও নিয়মটি আপাতত মানছে না রাজ্য সরকার। উচ্চমাধ্যমিকে অন্তত ৫০ শতাংশ নম্বর ও দু'বছরের ডিএলএড প্রশিক্ষণ থাকা প্রার্থীরাই এ রাজ্যে প্রাথমিকের টেট-এ বসতে পারবেন।

গত বছর প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে আবশ্যিক পরীক্ষা টেট-এর বিজ্ঞপ্তি জারি হয়। চার লক্ষ আবেদন জমা পড়ে। এখনও পরীক্ষার দিন ঘোষণা হয়নি।শনিবার শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, দীপাবলির পর প্রাথমিকে টেট-এর দিন ঘোষণা হতে পারে। অন্যদিকে, বিএড প্রশিক্ষণ থাকলেও প্রাথমিকের টেট-এ বসা যাবে না বলে এদিন জানিয়ে দিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য। মানিকবাবু জানিয়েছেন,  ইতিমধ্যে ডিএলএড শেষ হয়েছে বা কোর্সে ভর্তি হয়েছেন এমন প্রার্থীরাই শুধুমাত্র প্রাথমিকে টেট-এ বসার আবেদন করতে পারবেন।

কয়েক মাস আগে এনসিটিই (ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন) ঘোষণা করে, বিএড থাকলে টেট-এ বসা যাবে। কিন্তু পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য এদিন সাফ জানিয়েছেন,  বিএড থাকা প্রার্থীরা এ রাজ্যে প্রাথমিকের টেট-এ বসতে পারবেন না। তিনি বলেন,  "রাজ্যের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারও টেট নেয়। সেখানে বিএড প্রার্থীরা আবেদন করতে পারেন। পশ্চিমবঙ্গ সরকার এখনও এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়নি। রাজ্য সরকারের তৈরি করা নিয়মে বিএড প্রশিক্ষণ থাকা প্রার্থীরা প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা টেট-এ বসতে পারবেন না।"

২০১১-পর থেকে রাজ্য সরকার দু'বার টেট (টিচার এলিজিবিলিটি টেস্ট) নিয়েছে। প্রথমবার ১৮ হাজার এবং দ্বিতীয়বার ৪৫ হাজার শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে। ২০১৭-তে পর্ষদ তৃতীয়বার টেট গ্রহণের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। কিন্তু এখনও পরীক্ষা হয়নি। কবে পরীক্ষা হবে তা নিয়ে স্কুলশিক্ষা দপ্তরের কর্তারা জানাতে পারেননি। ইতিমধ্যে চারলক্ষ আবেদন গ্রহণ করেছে পর্ষদ। তৃতীয়বার টেট নেওয়ার আগে প্রাথমিকে কত শূন্য শিক্ষক পদ তাও জানা যায়নি। পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, ইসলামপুরের দাড়িভিট-কাণ্ডের পর কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না সরকার। শূন্যপদ জানার পর টেট-এর দিন ঘোষণা হবে। ইতিমধ্যে প্রাথমিক টেট পাশ করেও যাঁরা নিয়োগপত্র পাননি তাঁদের সবাইকে একটি করে শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। তবে প্রশিক্ষণহীনদের শংসাপত্র দেয়নি পর্ষদ।

শুধুমাত্র প্রশিক্ষণ থাকা প্রার্থীরাই টেট-এ আবেদন করতে পারবেন বলে নিয়ম তৈরি করে কেন্দ্রীয় সরকার। বাড়তি ছাড় চেয়েও কেন্দ্রের তরফে সাড়া পায়নি বাংলা। স্কুল শিক্ষা দপ্তরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, রাজ্যের লক্ষ লক্ষ মেধাবী শিক্ষিত ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে নিয়মে বাড়তি শৈথিল্য চাওয়া হয়। কিন্তু কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক রাজি হয়নি। এই কারণেই টেট-এ পাশ করে চাকরি না পাওয়া প্রশিক্ষণহীন প্রার্থীরা শংসাপত্র পাননি।