বিশ্বে সবচেয়ে বেশি জঙ্গি ঘাঁটি রয়েছে পাকিস্তানেই


পাকিস্তানকে বিশ্বের সবথেকে বিপজ্জনক রাষ্ট্র হিসাবে চিহ্নিত করা হল। সেই সঙ্গে বলা হল, সিরিয়ার থেকে অনেক বেশি জঙ্গি পালন করছে পাকিস্তান। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি অ্যাণ্ড স্ট্র্যাটেজিক ফোরসাইট গ্রুপের তৈরি করা একটি রিপোর্টে এই আশঙ্কা ও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক স্তরের সন্ত্রাস ও প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা এই রিপোর্ট তৈরি করেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, পাকিস্তানেই সবথেকে বেশি সন্ত্রাসবাদী রয়েছে। রয়েছে সবথেকে বেশি জঙ্গি ঘাঁটিও। সিরিয়ার তুলনায় পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদীরা বিশ্বের পক্ষে অন্তত তিনগুণ বেশি বিপজ্জনক। বস্তুত আইএসআইএসের কথা মাথায় রেখেও ওই অক্সফোর্ড রিপোর্ট বলেছে, আফগান তালিবান এবং লস্কর ই তোইবাই আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বৃহত্তম বিপদ। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের নিরিখে পাকিস্তানকে সন্ত্রাসের আঁতুরঘর হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে ওই রিপোর্টে। ইমরান খান নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ গ্রহণ করার পর অন্য পাকিস্তানের স্বপ্ন দেখিয়েছেন। এবং ভারত সহ আন্তর্জাতিক মহলকে বার্তা দিয়েছেন তিনি শান্তির পক্ষে। ভারতের সঙ্গে তিনি আলোচনা চান এবং ভারতই আলোচনা কিংবা আস্থাবর্ধক বৈঠকে আগ্রহী নয় এরকম একটি বার্তা তিনি দিতে চাইলেও, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির ওই রিপোর্ট ইমরান খানের প্রশাসনের কাছে অত্যন্ত উদ্বেগজনক। কারণ অন্যান্য প্রধানমন্ত্রীদের তুলনায় ইমরান খান নিজের এবং দেশের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি নিয়ে বেশি উদ্বিগ্ন। সেখানে তাঁর আমলেই পাকিস্তানে বিশ্বের সবথেকে বিপজ্জনক রাষ্ট্র এবং বিশ্ব সন্ত্রাসবাদের জন্মভূমি হিসাবে প্রতিপন্ন করার মতো রিপোর্ট তাঁকে যথেষ্ট বিব্রত করবে। 
ওই রিপোর্টটি এই কার঩ণেই বেশি তাৎপর্যপূর্ণ যে এটি রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদে জমা পড়বে। এবং এখানে বলা হয়েছে আইএসআইএস যদিও বেশ কয়েকবছর ধরে লাগাতার সবথেকে ভয়ঙ্কর জঙ্গি গোষ্ঠী হিসাবে তালিকার শীর্ষস্তরে ছিল, কিন্তু উল্কার মতো উত্থানের মতোই আইএসআইএসের শক্তিক্ষয়ও হয়েছে অত্যন্ত দ্রুত। তাই সেই তুলনায় আল কায়েদার অবস্থান অনেক বেশি দীর্ঘস্থায়ী। রিপোর্টে বলা হয়েছে আল কায়েদার জন্ম হয়েছিল পাকিস্তানে। এবং আফগানিস্তানে নিজেকে ছড়িয়েও দেয় ওই সংগঠন। এবং আগাগোড়া ওসামা বিন লাদেন পাকিস্তানের সহায়তা পেয়ে এসেছে। অ্যাবটাবাদে ২০০১ সালের মার্কিন হামলার পর সবথেকে নিরাপদ আশ্রয়স্থল গড়ে তুলেছিল ওসামা বিন লাদেন। আর সেটা গড়ে তুলতে প্রত্যক্ষ সাহায্য করেছে পাকিস্তানের প্রশাসন ও সেনা। অ্যাবটাবাদে আমেরিকার সীল বাহিনীর গোপন মধ্যরাতের আক্রমণে যখন লাদেন নিহত হয় তারপর কয়েক বছরের মধ্যে ফের আল কায়েদা ধ্বংস্বস্তুপ থেকে উঠে দাঁড়িয়েছে। কারণ আল কায়েদার নতুন কমান্ডার ইন চিফ আমলা বিন লাদেন। ওসামার পুত্র। খবর পাওয়া যাচ্ছে, এই জুনিয়র লাদেনের নেতৃত্বে আবার নতুন করে আল কায়েদা দ্রুত শক্তি সঞ্চয় করেছে। কারণ আইএসআইএস থেকে মোহভঙ্গ। তরুণ জেহাদিরা দলে দলে আবার ফিরছে আল কায়েদায়। আর এই গোটা প্রক্রিয়াকে সাহায্য করছে পাকিস্তান।

মোট ২০০টি জঙ্গি সংগঠনের বিশ্লেষণ করেছে এই রিপোর্ট নির্মাতা বিশ্লেষকরা। তাদের মধ্যে পাকিস্তানের জঙ্গিরাই ২০৩০ সাল পর্যন্ত লাগাতার সন্ত্রাস চালিয়ে যাওয়ার মতো শক্তিধর। পাকিস্তানে জঙ্গিবাহিনীগুলি রাজত্ব করছে ফেডারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবাল এরিয়া, খাইবার পাখতুনওয়ালা, পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর, কোয়েটা, বালুচিস্তান, পাঞ্জাব এবং সিন্ধু প্রদেশে। অর্থাৎ পাকিস্তানের বহু প্রদেশ আদতে সন্ত্রাসবাদীদেরই হাতে।