কর্ণকে ছাড়াতে কাঁথি থানায় হুমকি ফোন! বাকি দুষ্কৃতীরা এখনও অধরা

কর্ণকে ছাড়াতে তৎপর দুষ্কৃতীরা।

কর্ণ বেরাকে ছাড়তে বলে রীতিমতো হুমকি ফোন এল কাঁথি থানায়। পুলিশ সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ন'টা নাগাদ, থানার ল্যান্ডলাইনে একটি ফোন আসে। উল্টোদিক থেকে রীতিমতো শাসানো হয় পুলিশকে। সূত্রের খবর, উল্টো দিক থেকে বলে হয়, "কর্ণকে না ছাড়লে থানা জ্বালিয়ে দেওয়া হবে।"
বিষয়টি একদম ফাঁকা আওয়াজ হিসাবে দেখছে না পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, মোবাইল ফোন থেকে ফোন করা হয়েছিল। ফোনটি কাঁথি শহরের মধ্যেই কোথাও থেকে করা হয়েছিল বলে অনুমান পুলিশের। জেলা পুলিশের আধিকারিকরা নিশ্চিত, আদালত থেকে এ ভাবে পালানোর পরিকল্পনার পেছনে কোনও বড় গ্যাং যুক্ত। কর্ণের জন্য ইতিমধ্যেই অতিরিক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অন্য দিকে, পুলিশের চিন্তা বাড়িয়েছে কর্ণের সঙ্গে পালানো শেখ মুন্না।

বৃহস্পতিবার রাতভর কাঁথি শহর এবং সংলগ্ন এলাকায় তল্লাশি চালায় পুলিশ। কিন্তু কর্ণের সঙ্গে পালানো শেখ মুন্না বা সুরজিৎ গুড়িয়ার কোনও হদিশ পায়নি পুলিশ। আর সেই কারণেই চিন্তা বেড়েছে পুলিশ কর্তাদের। কারণ কর্ণের মতোই নৃশংসতার জন্য কুখ্যাত মুন্না। সে এক সময়ে পূর্ব এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে ডাকাতির জন্য কুখ্যাত ছিল। রীতিমতো আগে থেকে খবর দিয়ে ডাকাতি করত সে, দাবি পূর্ব মেদিনীপুরের এক পুলিশ আধিকারিকের। তার বিরুদ্ধে একাধিক ডাকাতি, খুন এবং ধর্ষণের মামলাও রয়েছে। বৃহস্পতিবার কর্ণের মতো তাকেও মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকে শুনানির জন্য আদালতে নিয়ে আসা হয়। কর্ণের মতো শেখ মুন্নাও আগে দু'বার পুলিশের হেফাজত থেকে পালিয়েছিল।

শুক্রবার সকাল পর্যন্ত কাঁথি পুলিশের ধারণা, শেখ মুন্না এবং বাকি অভিযুক্তরা কাঁথি শহরের মধ্যেই কোথাও গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে। এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, "এদের দ্রুত পাকড়াও না করতে পারলে বিপদ। বাধা পেলে খুনও করে দিতে পারে, এতটাই মরিয়া ওরা।" তিনি আরও বলেন, ''ওরা সবাই সশস্ত্র। এটা আরও ভয়ের ব্যাপার।" তাই জাতীয় সড়ক থেকে শুরু করে রাজ্য সড়কগুলোতেও নাকা তল্লাশি করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশের তরফে কাঁথির জনসাধারণকে মাইকে ঘোষণা করে সতর্ক থাকতে বলা হয়। সব মিলিয়ে কাঁথির মানুষ এখন যথেষ্ট আতঙ্কে।

শুক্রবার কর্ণকে কড়া নিরাপত্তায় আদালতে পেশ করা হয়। তার বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবারের ঘটনায় নতুন করে মামলা রুজু করা হয়েছে। কর্ণকে জেরা করার জন্য নিজেদের হেফাজতে চেয়েছে পুলিশ। আদালতে সরকারি আইনজীবী বলেন, "বাকিরা কোথায় আছে জানতে জেরা করা দরকার কর্ণকে। সেই সঙ্গে জানা দরকার গোটা পরিকল্পনায় আরও কারা কারা সামিল ছিল।"