বিজ্ঞাপন দিয়ে মামলা জানাতে হবে প্রার্থীকে


ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্তেরা যদি লোকসভা বা বিধানসভা ভোটে লড়তে চান তা হলে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলার কথা বিজ্ঞাপন দিয়ে জানাতে হবে জনসাধারণকে। জাতীয় নির্বাচন কমিশনের জারি করা নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় যে সংবাদপত্র এবং টিভি চ্যানেল সর্বাধিক প্রচারিত, সেখানেই বিজ্ঞাপন দিয়ে ফৌজদারি মামলার বিষয়ে জানাবেন প্রার্থী। তিনি কোনও রাজনৈতিক দলের হয়ে লড়লে সেই দলকেও আলাদা ভাবে বিজ্ঞাপন দিতে হবে। সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন খুদে খুদে অক্ষরে ছাপলে চলবে না। ছাপতে হবে ১২ পয়েন্ট বোল্ড অক্ষরে। সাধারণ ভাবে সংবাদপত্রে খবর ছাপা হয় ৯.৫ বা ১০ পয়েন্টে। ফলে ফৌজদারি মামলার বিবরণ যাতে আলাদা করে পাঠকের চোখে পড়ে, সেই ব্যবস্থা করতে চায় নির্বাচন কমিশন।

এক বার বিজ্ঞাপন ছাপিয়েই পার পাবেন না প্রার্থী। মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন থেকে ভোটগ্রহণের ৪৮ ঘণ্টা আগের মধ্যে তিনটি ভিন্ন ভিন্ন দিনে বি়জ্ঞাপন দিতে হবে। কী ভাবে এবং কোন বয়ানে বিজ্ঞাপন দিতে হবে, তা-ও নির্দিষ্ট করে দিয়েছে কমিশন। এ ব্যাপারে রাজ্যগুলির সিইও-দের কাছে ইতিমধ্যেই নির্দেশিকা
পাঠানো হয়েছে। পাঠানো হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলির কাছেও। দলগুলিকে তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটেও দলীয় প্রার্থীদের বিরুদ্ধে থাকা ফৌজদারি মামলার বিষয়ে জানাতে বলা হয়েছে।

রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়ন রুখতে সেপ্টেম্বরের শেষে নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। তা কার্যকরী করতেই কমিশনের এই নতুন ফরমান। কমিশন সূত্রে বলা হচ্ছে, ফৌজদারি অভিযোগ থাকা প্রার্থীর সংখ্যা প্রতি বছরই লাফ দিয়ে বাড়ছে। ২০০৪ সালের লোকসভা ভোটে যাঁরা জিতেছিলেন, তাঁদের ২৪ শতাংশের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা ছিল। ২০০৯ সালে তা বেড়ে হয় ৩০ শতাংশ এবং ২০১৪ সালে ৩৪ শতাংশ। এখন ফৌজদারি মামলা সংক্রান্ত তথ্য প্রার্থীকে হলফনামা দিয়ে কমিশনকে জানাতে হয়। তার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে বিজ্ঞাপন দেওয়ার বিষয়টি।

কোন সংবাদপত্র ও টিভি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হল, তার সবিস্তার বিবরণ নির্বাচনী প্রক্রিয়া শেষের ৩০ দিনের মধ্যে সিইও-র দফতরে তা পাঠাতে হবে রাজনৈতিক দলগুলিকে। এর অন্যথা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তথ্য পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে সিইও-র দফতর তা কমিশনের কাছে পাঠিয়ে দেবে। নভেম্বর-ডিসেম্বরে ছত্তীসগঢ়, মধ্যপ্রদেশ, মিজোরাম, রাজস্থান এবং তেলঙ্গানার বিধানসভা ভোট থেকেই এই নির্দেশ কার্যকরী হওয়ার কথা।