"ঘরে ঢুকে শ্লীলতাহানি করব", লিলুয়ায় নিরঞ্জন শেষে তাণ্ডব মাতালদের

মাতালদের তাণ্ডবে আহত ব্যক্তি
     
লিলুয়া : দুর্গাপুজোর নিরঞ্জনের মাঝেই ঘটে গেল এক অদ্ভুত কাণ্ড। ঘটনাটি লিলুয়ার ভট্টনগর বিবেক সংঘ ক্লাবের। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে দুই মাতালের বচসা বাধে। এরপর প্রায় ৫০ জন দুষ্কৃতী নিয়ে হাজির হয় ওই দু'জন। লাঠি, লোহার রড, ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালাতে শুরু করে। এই ঘটনায় তিনজন গুরুতরভাবে জখম হয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা শুক্রবার রাতে লিলুয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার রাতে। নিরঞ্জন চলছিল বিবেক সংঘ ক্লাবের। সেসময় রাস্তার প্রায় মাঝখান দিয়ে যাচ্ছিল ওই দুই অভিযুক্ত। ক্লাবের এক মেম্বার তাদের অনুরোধ করে বলেন, "মোটরসাইকেল নিয়ে একটু পাশ দিয়ে যান দাদা।" হঠাৎ, তাঁর গালে চড় মারে এক মাতাল। বচসা শুরু হয় দু'পক্ষের। এরপর স্থানীয়রা ওই দুই ব্যক্তিকে আটকে রাখে। পরে পুজোর কথা ভেবে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। চলেও যায় ওই দু'জন। এরপর নিরঞ্জন শেষ করে বাড়ি আসেন ক্লাবের সদস্যরা। হঠাৎ এলাকায় দুষ্কৃতী হামলা হয়। এলাকাবাসী দেখেন, ওই দুই মাতাল জনা পঞ্চাশেক দুষ্কৃতী নিয়ে এলাকায় এসে তাণ্ডব চালাচ্ছে। একাধিক বাড়ির জানালা, ক্লাবের লাইট ভাঙচুর করছে। স্থানীয়রা বাধা দিতে যান। তাঁদের উপরও লাঠি, রড দিয়ে হামলা চালানো হয়। মহিলারা বেরিয়ে আসেন। দুষ্কৃতীরা হুমকি দিয়ে বলে, "ঘরে ঢুকে শ্লীলতাহানি করে দেব।" 

পরে দু'জন দুষ্কৃতীকে ধরে ফেলেন স্থানীয়রা। একজনের নাম সৌরভ দে। বাড়ি চকপাড়া স্বামীজি সংঘ এলাকায়। অন্যজন তন্ময় ঘোষ। বাড়ি চকপাড়া মিলনি এলাকায়। রাতেই তাদের নিয়ে যাওয়া হয় লিলুয়া থানায়। তার আগে ফের চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। জনা তিরিশ দুষ্কৃতী সেই দলে ছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তারা হুমকি দিয়ে বলে, "তোরা থানায় রিপোর্ট করতে যাচ্ছিস ?" এরপরই শুরু হয় মারধর। আহত হন বিশ্বজিৎ দাস, চন্দন দাস, উত্তম দাস নামে তিনজন। এছাড়া আরও বেশ কয়েকজনের অল্পবিস্তর আঘাত লেগেছে। তাঁদের হাওড়ার জয়সওয়াল হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা অবশ্য ভয়ে পিছিয়ে না এসে সেই রাতেই অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ সৌরভ ও তন্ময়কে আটক করে বলেও জানিয়েছেন স্থানীয়রা। 

স্থানীয়রা বলেন, "আমরা পুলিশকে জানিয়েছিলাম ওই দু'জন হামলার সঙ্গে জড়িত। তাও পুলিশ ওদের জামিনে ছেড়ে দিয়েছে। অন্যদেরও ধরছে না। ওরা চকপাড়ার। তারপরও নাকি পুলিশ তাদের খুঁজে পায়নি !" লিলুয়া থানার তরফে জানানো হয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে। এলাকায় পুলিশ পিকেটিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।