বাবা-ঠাকুরদা পারেননি, মাটি খুঁড়ে হিরে পেলেন মধ্যপ্রদেশের দিনমজুর


মাটির নীচেই লুকিয়ে রয়েছে হিরে-জহরত। তিন পুরুষ আগেই তার খোঁজ শুরু হয়েছিল। তবে এত দিন কারও ভাগ্যেই শিকে ছেঁড়েনি।  অবশেষে শেষ হাসিটি হাসলেন মোতিলাল প্রজাপতি।  বাবা-ঠাকুরদা যা পারেননি, তা-ই করে দেখিয়েছেন তিনি।  মঙ্গলবার  মাটি খুঁড়ে বার করেছেন একটি প্রমাণ সাইজের হিরে। ওজন ৪২.৫৯ ক্যারাট।  যার বাজারদর অন্তত দেড় থেকে আড়াই কোটি টাকা।
মধ্যপ্রদেশের ছোট শহর পান্নাতে ছড়িয়েছিটিয়ে রয়েছে হিরের খনি। শহরের মাটি খুঁড়লেই নাকি মেলে হিরে। এমনটাই বিশ্বাস করেন ওই এলাকার বাসিন্দারা। তাই অনেকেই হিরের স্বপ্নে বিভোর থাকেন। মাটি খুঁড়ে চলে হিরের খোঁজ। ব্যতিক্রম ছিলেন না মোতিলালের বাবা-ঠাকুরদাও। দিনমজুরি করে পেট চললেও তাই স্বপ্ন নিয়েই বাঁচতেন পঞ্চাশ বছরের মোতিলাল। একদিন না একদিন হিরে খুঁজে পাবেন!  পেশায় দিনমজুর মোতিলালের বাবা-ঠাকুরদাও সেই স্বপ্নে ভর করেই আজীবন মাটি খুঁড়ে গিয়েছিলেন। তবে কারও ভাগ্যই খোলেনি। কিন্তু মাত্র মাস দেড়েকের চেষ্টাতেই স্বপ্ন সফল হয়েছে মোতিলালের।

সংবাদমাধ্যমের কাছে মোতিলাল জানিয়েছেন, মাস দেড়েক আগে ধারদেনা করে শহরের কৃষ্ণ কল্যাণপুর এলাকায় একটি জমি কিনেছিলেন তিনি। এর পর ভাই রঘুবীরকে নিয়ে মাটি খোঁড়ার কাজে লেগে পড়েন। অবশেষে হিরের মুখ দেখতে পেয়েছেন। পান্না শহরে সেই ১৯৬১ সালে এর চেয়েও বড় হিরের খোঁজ মিলেছিল। সেই হিরের ওজন ছিল ৪৪.৫৫ ক্যারাট।  মাতুয়াতোলা গ্রামের রসুল মহম্মদ তা খুঁজে পেয়েছিলেন।


মাটি খুঁড়ে এই হিরেটি খুঁজে পেয়েছেন মোতিলাল প্রজাপতি।

হিরের দেখা পেয়ে স্বভাবতই উচ্ছ্বাস চেপে রাখতে পারেননি মোতিলাল। তিনি বলেন, "আমি খুব খুশি। প্রায় দেড় মাস ধরে এত খাটাখাটনির পর  একটা হিরে পেয়েছি। তা-ও আবার কোটি টাকার হিরে।"

হিরের খোঁজ মিলতেই তার সঠিক দাম জানতে শহরের ডায়ামন্ড অফিসে ছুটে গিয়েছিলেন মোতিলাল। সেই অফিসে গিয়ে হিরেটি জমা করেন তিনি। অফিসের এক আধিকারিক অনুপম সিংহ জানিয়েছেন, প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, ওই হিরের দাম দেড় থেকে আড়াই কোটি টাকা হবে।
আপাতত বিশেষজ্ঞরা ওই হিরের মূল্য যাচাই করবেন। এর পর আগামী জানুয়ারিতে তা নিলামে তোলা হবে। সেই নিলামে যা দর উঠবে তার থেকে সরকারের রয়্যালটি এবং কর বাবদ টাকাপয়সা ছেঁটে মোতিলালকে হিরের দাম মিটিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অনুপম।

কোটিপতি হওয়ার পর মোতিলালের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী? নিশ্চিন্ত মুখে তিনি বলেন, "ওই টাকা দিয়ে ৫ লাখ টাকার দেনা শোধ করতে পারব। আমার সব সমস্যা মিটিয়ে দেবে এই হিরে!" ধারদেনা মিটিয়েই অবশ্য থেমে থাকতে চান না মোতিলাল। ওই টাকা দিয়ে সন্তানদের লেখাপড়া করাতে চান তিনি।