পারিবারিক অশান্তিতেই স্ত্রীকে খুন, রাজনৈতিক রং দেওয়ার চেষ্টা তৃণমূল কর্মীর

নদীয়ার চাপড়ায় তৃণমূল কর্মীর স্ত্রী খুনের ঘটনায় খারিজ হয়ে গেল শাসকদলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ। অভিযোগ, স্ত্রীকে খুন করেছেন স্বামী তাহাজুল শেখ নিজেই। জেরায় খুনের কথা স্বীকার করে নিয়েছে তাহাজুল। খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামী ও শাশুড়িকে গ্রেফতার করেছে পুলিস।

বৃহস্পতিবার বাড়িতে চড়াও হয়ে তৃণমূল কর্মী তাহাজুল শেখের স্ত্রীকে খুন করে দুষ্কৃতীরা। প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফলেই এই হামলা ঘটনাটি ঘটেছে। দুষ্কৃতীদের টার্গেট ছিল তাহাজুল। কিন্তু বাড়িতে চড়াও হয়ে তাহাজুলকে না পেয়েই তাঁর স্ত্রী মর্জিনা বিবিকে গুলি করে দুষ্কৃতীরা। রক্তাক্ত শরীরে লুটিয়ে পড়েন মর্জিনা বিবি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর।

খুনের ঘটনায় দলের অন্দরে গোষ্ঠীকোন্দলের দিকেই অভিযোগের আঙুল তোলেন তাহাজুল নিজেও। জানান, দিনকয়েক আগে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান কে হবে, তা নিয়ে ঝামেলা বাধে। সেসব নিয়ে গ্রামের পরিস্থিত উত্তপ্ত ছিল। বৃহস্পতিবার গ্রামসভা ছিল। সেখানেই আরও বড় গোল বাধে। দাবি করেন, তারপরই তাঁর বাড়ি চড়াও হয় জনা কয়েক দুষ্কৃতী। অপর গোষ্ঠীর কয়েকজনকে বাড়িতে আশ্রয় দেওয়ার জন্য তাঁদের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। তাঁকে না পেয়ে স্ত্রীকে গুলি করে খুন করে দুষ্কৃতীরা।

যদিও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা মানতে রাজি হননি তৃণমূলের ব্লক সভাপতি। গোটা বিষয়টি ব্যক্তিগত বচসার পরিণাম বলে দাবি করেছিলেন তিনি। পুলিসও প্রাথমিক তদন্তের পর গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ খারিজ করে দেয়। জানায় যে, এই খুনের পিছনে কোনও রাজনৈতিক রং নেই। জানা যায়, জমিতে জল দেওয়া নিয়ে সম্প্রতি পড়শি পরিবারের সঙ্গে ঝামেলা হয়েছিল। খুনের পিছনে সেই ঘটনার কোনও যোগ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হয়। কিন্তু, সেই সম্ভাবনাও ধোপে টেকে না। এরপরই সন্দেহর তির গিয়ে পড়ে স্বামী তাহাজুল শেখের উপর।

দফায় দফায় জেরায় স্ত্রী মর্জিনা বিবিকে খুনের কথা কবুল করে নেয় তাহাজুল। পুলিসকে সে জানায়, তাঁদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাদ ছিল। পারিবারিক অশান্তির জেরেই সে ও তাঁর মা মিলে স্ত্রী মর্জিনা বিবিকে খুন করেছে। এরপরই মর্জিনা বিবিকে খুনের অভিযোগে তাহাজুল ও তাঁর মাকে গ্রেফতার করে পুলিস।