রাতের আঁধারে মেডিক্যালে মদের আসর! কর্তৃপক্ষ জানেনই না


ছাদের দরজায় তালা দেওয়া। সিঁড়ির একেবারে শেষ মাথা। ওখানে সাধারণত কেউ যায় না। নোংরা এবং বাতিল সামগ্রী ডাঁই করে রাখা রয়েছে। তারই সামনে চাতালে ছড়িয়ে রয়েছে মদের বোতল, প্ল্যাস্টিকের গ্লাস, চিপসের খালি প্যাকেট। কোণের দিকে রাখা বিয়ারের বোতলও। দেখে বোঝাই যায়, প্রায় প্রতি দিনই এখানে মদের আসর বসে।

এটা পরিতক্ত কোনও বাড়ি বা ফ্ল্যাট নয়। এমনকি নির্মীয়মাণ কোনও বহুতলও নয়। এই ছবি ধরা পড়েছে খোদ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে!

শতাব্দী প্রাচীন এই হাসপাতালের এমসিএইচ বিল্ডিংয়ের একবারে উপরে, চারতলায় যেখানে সিঁড়ি শেষ হয়েছে, সেখানেই রাতেরবেলা এই মদের আসর বসে বলে বহু দিন ধরেই অভিযোগ। মেডিক্যাল কলেজের মতো সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে এমন ছবিতে যথেষ্ট অস্বস্তিতে কর্তৃপক্ষ। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের সুপার ইন্দ্রনীল ঘোষ বলেন, ''এ রকম ঘটনা বাঞ্ছনীয় নয়। নির্দিষ্ট করে কোনও অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।''

কয়েক দিন আগে এই এমসিএইচ বিল্ডিংয়ের নীচের তলায় ফার্মাসি স্টোরে আগুন লাগে। এই বিল্ডিংয়ে মেডিসিন, কার্ডিওলজি, হেমাটোলজি-সহ গুরুত্বপূর্ণ ওয়ার্ড রয়েছে। সেই সব ওয়ার্ডে যেতে গেলে এই সিঁড়ি দিয়েই উঠতে হয়। সিঁড়িতে ওঠা এবং ওয়ার্ডে ঢোকার মুখে রয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। খুব সহজে সেখানে প্রবেশ করা সম্ভব নয়। রোগীর পরিজন দেখা করতে এলেও, তাঁর পরিচয়পত্র এবং হাসপাতালের পাস দেখিয়ে ঢুকতে হয়। এত আঁটোসাঁটো নিরাপত্তা পেরিয়ে কে বা কারা মদের বোতল নিয়ে উঠে যায় তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হাসপাতালের কর্মী বলেন, "হাসপাতালেরই কয়েক জন রয়েছেন, যাঁরা রাতের অন্ধকারে ওখানে মদ খান। এখানে মদ খেতে তো আর বাইরে থেকে লোক আসবে না। আর যেখানে এই বোতলগুলি রয়েছে, সেখানে সাধারণ মানুষ অর্থাৎ রোগী বা রোগীর পরিবারের লোকজনের যাতায়াত নেই।" অন্য এক কর্মী জানিয়েছেন, এমসিএইচ বিল্ডিংয়ের প্রতিটি তলাতেই সিসি ক্যামেরা রয়েছে। তাঁর কথায়, ''সিসিটিভি ফুটেজ দেখা হোক। কে, কখন, কোথায় ঢুকছেন, সবই ধরা পড়ে যাবে।''

কর্মীদের ভিতর থেকে এমন অভিযোগ আসছে শুনে সুপার ইন্দ্রনীল ঘোষ শুধু বলেন, ''বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।''