জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণ, লালগোলায় গ্রেপ্তার প্রেমিক ও তার বন্ধু


লালবাগ: বেড়াতে যাওয়ার নাম করে দশম শ্রেণীর ছাত্রীকে মুর্শিদাবাদের লালগোলায় জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল প্রেমিক সহ চারজনের বিরুদ্ধে। ছাত্রীর পরিবারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিস প্রেমিক সহ দু'জনকে গ্রেপ্তার করেছে। অভিযুক্ত আরও দু'জন পলাতক বলে পুলিস জানিয়েছে। তাদের খোঁজে পুলিস তল্লাশি শুরু করেছে। নির্যাতিতা ছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে চার অভিযুক্তের ফাঁসির দাবি জানানো হয়েছে। নির্যাতিতা ছাত্রীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে।

পুলিস ও ছাত্রীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, লালগোলা থানার পণ্ডিতপুরের ওই ছাত্রীর সঙ্গে ওই গ্রামের আকাশ শেখের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রেমিকের মোটরবাইকে চেপে এলাকার একটি পার্কে ঘুরতে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়। কিন্তু, আকাশ তার প্রেমিকাকে পার্কে না গিয়ে সাত কিলোমিটার দূরে লালগোলা রাজবাড়ির পিছনে গভীর জঙ্গলে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকেই অপেক্ষা করছিল আকাশের তিন বন্ধু। জঙ্গলে তিনজনকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ছাত্রীটি পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু, তাকে আকাশ ও তার বন্ধুরা ধরে ফেলে। তারা জোর করে জঙ্গলের মধ্যে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করলে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে নির্যাতিতা ছাত্রী। এরপর অভিযুক্তরা ছাত্রীটিকে প্রচণ্ড মারধর করে। তারপর বিবস্ত্র করে গণধর্ষণ চালায়। এরপর নির্যাতিতা ছাত্রীটি প্রায় বিবস্ত্র অবস্থায় কোনও প্রকারে জঙ্গল থেকে রাজ্য সড়কে আসে। স্থানীয় এক যুবক ওই নির্যাতিতা ছাত্রীর ভয়াবহ অবস্থা দেখে তার লজ্জা নিবারণের জন্য বাড়ি থেকে কাপড় এনে তাকে দেয়। স্থানীয় মহিলারা ওই ছাত্রীর প্রাথিমক সেবা করার পর বাড়িতে তার বাড়িতে ও থানায় খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিস ও পরিবারের লোকজন সেখানে গিয়ে ছাত্রীকে লালগোলা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ওই রাতেই মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়।

নির্যাতিতা ছাত্রীর মা বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে মেয়েকে বাড়িতে রেখে বাড়ির পাশে ভাশুরের বাড়িতে গিয়েছিলাম। কিছুক্ষণ পরে ফিরে দেখি, মেয়ে বাড়িতে নেই। ঘণ্টা দেড়েক পরে ফোনে মেয়ের খবর পাই। তিনি আরও বলেন, আকাশ শেখের সঙ্গে মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মাস দু'য়েক আগে দু'জনের সম্পর্কে ছেদ পড়ে। নতুন করে সম্পর্ক জোড়া লাগানোর জন্য ওই ছেলেটি মেয়েকে চাপ দিচ্ছিল। কিন্তু, মেয়ে রাজি হচ্ছিল না। তাই আকাশ ও তার বন্ধুরা পরিকল্পিতভাবে এই ভয়াবহ ঘটনাটি ঘটিয়েছে। মেয়ের উপরে যারা নির্মম অত্যাচার চালিয়েছে তাদের ফাঁসি চাই।
নির্যাতিতা ছাত্রীর এক আত্মীয় বলেন, অভিযুক্তরা প্রচণ্ড মারধর করেছে। দু'দিন পরেও ওর নাক থেকে রক্ত বেরচ্ছে। দুটো চোখ এতটাই ফুলেছে যে তাকাতেও পারছে না। নারকীয় অত্যাচার চালানোর পাশপাশি কানের দুল ও গলার সোনার চেন ছিনতাই করে নিয়ে পালিয়েছে অভিযুক্তরা।

লালগোলা থানার ওসি বিপ্লব কর্মকার বলেন, ছাত্রীর প্রেমিক সহ চারজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে প্রেমিক সহ দু'জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি দুই অভিযুক্তের খোঁজ চলছে। খুব শীঘ্রই বাকিদের গ্রেপ্তার করা হবে।