বাবা-মা-বোনকে খুন করল কিশোর


কোনও ডাকাতির ঘটনা নয়।  ১৯ বছরের ছেলেই খুন করেছে বাবা-মা ও বোনকে। দিল্লির  বসন্ত কুঞ্জে  একই পরিবারের তিন সদস্যের রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় পুলিসের হাতে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য।  

অভিযুক্ত কিশোর সুরজ ভর্মাকে গ্রেফতার করেছে  দিল্লি পুলিস। তাকে জেরা করে উঠে এসেছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য।

গত বুধবার দিল্লির বসন্ত কুঞ্জের কিষাণগড় থেকে একই পরিবারের তিন সদস্যের  দেহ উদ্ধার হয়।  দুই ছেলেমেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে বসন্ত কুঞ্জের কিষাণগড়ের  বাড়িতে থাকেন  মিথিলেশ ভর্মা  নামে ওই ব্যক্তি।  এলাকায় সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি নামে পরিচিত মিথিলেশের সেরকম কোনও শুক্র ছিল  না বলেই জানিয়েছেন প্রতিবেশীরা। বুধবার সকালে দীর্ঘক্ষণ ওই পরিবারের কাউকে দেখতে না পেয়ে বাড়িতে যান তাঁরা। প্রতিবেশীদের দাবি, শোওয়ার ঘরের মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিলেন মিথিলেশ ও তাঁর স্ত্রী। খাটের ওপর পড়ে ছিল তাঁদের ছেলে-মেয়ে। সকলেরই শরীরে একাধিক ক্ষত ছিল। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই মৃত্যু হয় মিথিলেশ, তাঁর স্ত্রী ও মেয়ের। মিথিলেশের আহত ছেলে সুরজকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

স্থানীয়দের দাবি ছিল, কেউ বা কারা রাতে মিথিলেশের বাড়িতে চুরি করতে ঢুকেছিল। ধরা পড়ে যাওয়ার পরই ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে। কিন্তু প্রথম থেকেই  পুলিসের সন্দেহ ছিল সুরজের ওপর। মিথিলেশের ছেলে সুরজ ওরফে সরনাম ভর্মা অত্যন্ত অনলাইন গেমে আসক্ত ছিল। পড়াশোনায় অমনোযোগী ছেলেকে বাগে আনতে চেয়েছিল মিথিলেশের পরিবার।

জানা গিয়েছে, সুরজ আলাদা জায়গায় একটি ঘর ভাড়া নিয়েছিল। কলেজ না গিয়ে সেখানেই বেশিরভাগ দিন থাকত সে। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা মারত। অনলাইনে গেম খেলত। তা নিয়ে পরিবারে বিস্তর অশান্তি ছিল। পথের 'কাঁটা' সরাতেই বাবা-মা-বোনকে খুন করার ছক কষে সে। 

জেরায় জানা গিয়েছে, রাত তিনটে নাগাদ প্রথমে বাবাকে সবজি কাটার ছুরি দিয়ে কুপিয়েখুন করে সে। এরপর খুন করে বোনকে। মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে ছেলের হাতে খুন হতে হয় মিথিলেশের স্ত্রীকেও।  এরপর সারা ঘরের জিনিস ওলটপালট করে দেয়, যাতে এটিকে ডাকাতির ঘটনা বলে মনে করে সকলকে। পুলিস জানিয়েছে ধরা পড়ার পর সুরজের মধ্যে কোনও অনুশোচনা দেখা যায়নি।