সন্ন্যাসিনী ধর্ষণ মামলার সাক্ষীর রহস্যমৃত্যু, খুনের অভিযোগ তুলল পরিবার


কেরলে সন্ন্যাসিনী ধর্ষণ কাণ্ডের তদন্তে নতুন মোড়। অভিযুক্ত বিশপ ফাদার ফ্রাঙ্কো মালাক্কালের বিরুদ্ধে প্রধান সাক্ষ্যদানকারী বিশপ কুরিয়াকোসে খাট্টুথারাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেল জলন্ধরের একটি চার্চে।

বিশপ মালাক্কালের বিরুদ্ধে যারা সাক্ষ্যদান করেছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন খাট্টুথারা। মালাক্কালের বিরুদ্ধে বরাবরই সরব ছিলেন এই বিশপ। সোমবার তাঁর মৃতদেহ পাওয়া যায় জলন্ধরের দৌসার সেন্ট পল চার্চে। ৬১ বছরের বিশপের মৃত্যু কীভাবে তা নিয়ে এখন তদন্ত চলেছে।

দৌসার ডিএসপি এ আর শর্মা সংবাদসংস্থা এএনআইকে জানিয়েছেন, ফাদার খাট্টুথারার মৃতদেহ পাওয়া যায় সেন্ট পল চার্চে। সেখানেই তিনি থাকতেন। তাঁর কোনও নিরাপত্তারক্ষী ছিল না। এনিয়ে তদন্ত চলছে। দেহে কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই বলে জানতে পারছি। তবে বিছানায় বমির দাগ পাওয়া গিয়েছে। পাওয়া গিয়েছে প্রেসারের ওষুধ।

ফাদার খাট্টুথারার পরিবারের পক্ষ থেকে এই ঘটনাকে খুন বলে দাবি করা হয়েছে। খাট্টুথারার ভাই সংবাদমাধ্যমে দাবি করেছেন, খুনিই করা হয়েছে দাদাকে। এই মৃত্যুর পুলিশি তদন্ত হোক।

অভিযুক্ত বিশপ মালাক্কাল বর্তমানে কোয়াট্টমের সাব জেল রয়েছেন। তাঁর বিচারবিভাগীয় হেফাজতে থাকার মেয়াদ বাড়ানোর বিরুদ্ধে তিনি হাইকোর্টে আবেদন করেছেন।

উল্লেখ্য, বিশপ মালাক্কালের বিরুদ্ধে কেরলের একটি চার্চের নানকে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ২০১৪-২০১৬ সালের মধ্যে তাঁকে ১৩ বার ধর্ষণ করেছেন মালাক্কাল,  এমনটাই অভিযোগ করেছেন অভিযোগকারী ওই নান।

বিশপ ফ্রাঙ্কো মালাক্কালকে গ্রেফতারের দাবিতে ভ্যটিক্যানে চিঠি লেখেন কেরলের নানদের সংগঠন। তার পরেই সাময়িকভাবে ফ্রাঙ্কোকে তাঁর দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

নির্যাতীতা নান অভিযোগ করেছিলেন মালাক্কাল তাঁকে ২০১৪ সালের ৫ মে কেরলের কুরাভিলাঙ্গাদ কনভেন্টে প্রথমবার ধর্ষণ করেন। কিন্তু মালাক্কাল পুলিসের জেরায় দাবি করেছেন, তিনি ওই সময়ে কুরাভিলাঙ্গাদ কনভেন্টে ছিলেন না। তবে তিনি ওই তারিখে কুরাভিলাঙ্গাদ কনভেন্টে গিয়েছিলেন কিন্তু সেখানে তিনি থাকেননি।

এদিকে কেরল পুলিস বিশপের ওই দাবি অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, কুরাভিলাঙ্গাদ কনভেন্টের লগবুক ঘেঁটে ও বিশপের গাড়ির চালক ও কনভেন্টের নানদের জেরা করে জানা গিয়েছে ওই তারিখে বিশপ ফ্রাঙ্কো কুরাভিলাঙ্গাদ কনভেন্টে রাত কাটিয়েছিলেন।

এখানেই থেমে থাকেনি পুলিস। সংগ্রহ করা হয়েছে বিশপের মোবাইল ফোনের টাওয়ার লোকেশনের বিস্তারিত তথ্য। দেখা যাচ্ছে ২০১৪ সালের ৫ মে বিশপ ফ্রাঙ্কো কুরাভিলাঙ্গাদ কনভেন্টে রাত কাটিয়েছিলেন। এনিয়ে প্রশ্ন করা হয়ে বিশপ কোনও কথা বলেননি বলে দাবি করেছে কেরল পুলিস।