ঘরে ফেরার লড়াইয়ে জয়, ইরান থেকে শহরে পা ১১জন স্বর্ণশিল্পীর


দীর্ঘ টানাপোড়নের পর অবশেষে ঘরে ফিরলেন ইরানে আটকে থাকা বাংলার ১১জন স্বর্ণশিল্পী৷ বুধবার ভোরে দমদম বিমানবন্দরে নামেন তাঁরা৷ ইরান থেকে বাংলার মাটিতে পা রেখেই রাজ্য প্রশাসনকে কৃতজ্ঞতা জানাতে ভোলেননি ওই স্বর্ণশিল্পীরা৷

ইরানে সোনার কাজ করতে গিয়ে আটক পড়া রাজ্যের ১২ জন কর্মীকে ফিরিয়ে আনতে পুজোর পরপরই উদ্যোগ নেয় সিআইডি৷ পরে ন্যাশনাল অ্যান্টি ট্রাফিকিংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়৷ অ্যান্টি ট্রাফিকিংয়ের তরফে ইরানের ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে স্বর্ণশিল্পীদের ফিরিয়ে আনার তৎপরতা শুরু হয়৷ আটকে পড়া কর্মীদের জন্য খাবারের বন্দোবস্ত করা থেকে শুরু করে তাঁদের দেশে ফিরিয়ে আনতে পাসপোর্টের ব্যবস্থা করতে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে দফায় দফায় যোগাযোগ করেন সিআইডি আধিকারিকরা৷ কীভাবে তাঁদের দেশে ফেরানো যায়, সে বিষয়েও প্রশাসনিক তৎপরতা শুরু হয়৷ যুদ্ধকালীন তৎপরতায় স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রাখার কাজও শুরু হয়৷ ইরানে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখার অভিযোগ ওঠা এজেন্টদের খোঁজখবর নিতে শুরু করেন সিআইডি আধিকারিকরা৷

কিন্তু, কেন আটকে রাখা হয়েছিল তাঁদের? আটকে পড়া স্বর্ণশিল্পী গিয়াসউদ্দিন মল্লিক জানান, ''সব কিছুই ঠিকঠাকই চলছিল৷ কাজ অনুযায়ী বেতনও মিলছিল৷ মাঝে দু'মাস বেতন আটকে গেলেও পরে ধাপে ধাপে তা দিয়ে দেওয়া হয়৷ কিন্তু, ইরানের মুদ্রার দাম পড়ে যাওয়ায় সমস্যা শুরু হয়৷ লোকসানের মুখে পড়ে কোম্পানি বন্ধ হয়ে যায়৷ কিন্তু, আমরা বাড়ি ফিরতে চাইলে ঠিকা সংস্থার কর্মীরা আমাদের পাসপোর্ট আটকে রাখে৷ একটি ঘরে মধ্যে আমাদের সবাইকে আটকে রাখা হয়৷ খাবার ও পানীয় জল দেওয়াও হত না৷ পরে, ভিডিও কল করে আমরা পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করি৷ প্রশাসনের সঙ্গেও যোগাযোগ করি৷ ইরান সরকার ও ন্যাশনাল অ্যান্টি ট্রাফিকিংয়ের উদ্যোগে আমরা দেশে ফিরতে পারলাম৷''

জানা গিয়েছে, সাত মাস আগে পাণ্ডুয়ার এক এজেন্ট তাঁদের ইরানে নিয়ে যায়৷ ৫০ হাজার টাকা মাইনের টোপ দেয়৷ সোনার কাজ দেবে বলে পাণ্ডুয়ার চার যুবক-সহ মোট ১২ জনকে ইরানে নিয়ে যায় ওই এজেন্ট। সেখানে তারা তিন মাস ২৭ হাজার টাকা করে বেতন পায়। অভিযোগ, এরপর শেষ চার মাস ধরে তারা কোনও বেতন দিচ্ছে না। পাশাপাশি তাদের ইরানে একটি জায়গায় আটকে রাখা হয়েছে। পাণ্ডুয়ার ওই যুবকদের নাম রহিম আলি, বাড়ি পাণ্ডুরার জায়ের গ্রামে। গিয়াসুদ্দিন মালিক, বাড়ি কোটাল পুকুর। সাইফুল হাসান, বাড়ি পাণ্ডুয়ায়। সাইদুল ইসলাম, বাড়ি গুরজলা এলাকায়।