৫ রাজ্যে এক মাসব্যাপী ভোট ঘোষণা কমিশনের, সব গণনা ১১ ডিসেম্বর


কবে ভোট হবে মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তিসগঢ়, মিজোরাম, তেলঙ্গানা বিধানসভার— ঘোষণা করতে এই মুহূর্তে সাংবাদিক সম্মেলনে বসেছে নির্বাচন কমিশন। ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করছেন দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ওপি রাওয়াত।

দু-দফায় নির্বাচন হবে ছত্তীসগঢ়ে। প্রথম দফার (১৮টি আসনে) নির্বাচন হবে ১২ নভেম্বর। আর দ্বিতীয় দফার (৭২টি আসনে) নির্বাচন হবে ২০ নভেম্বর।

মধ্যপ্রদেশ এবং মিজোরামে একই দিনে ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করেছে কমিশন। ২৩০টি আসনের মধ্যপ্রদেশ বিধানসভার ভোট ২৮ নভেম্বর। ওই দিন ৪০ আসনের মিজোরামেও ভোট হবে।

রাজস্থান এবং তেলঙ্গানার ভোটও একই দিনে, ঘোষণা নির্বাচন কমিশনের। ৭ ডিসেম্বর এই দুই রাজ্যে বিধানসভা ভোট হবে। সব রাজ্যেই ফল ঘোষণা হবে ১১ ডিসেম্বর।
 
লোকসভা ভোটের আগে এটাই বিজেপি আর কংগ্রেসের শেষ বড় নির্বাচনী পরীক্ষা। মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তিসগঢ় আর মিজোরামের বিধানসভা ভোট নির্ধারিতই ছিল এ বছরের শেষে। এর মধ্যে গত মাসে আচমকা তেলঙ্গানা বিধানসভা ভেঙে দেন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রশেখর রাও। ফলে সেখানেও ভোট এগিয়ে আসছে।

প্রথমে অবশ্য বেলা সাড়ে ১২টায় নির্বাচনী নির্ঘণ্ট ঘোষণার কথা জানিয়েছিল কমিশন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তা বদলে বেলা ৩টে করা হয়। শেষ মুহূর্তে আচমকা এই বদল কেন? সরাসরি না বললেও কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সূরজেওয়ালার টুইট অবশ্য এর পিছনে প্রধানমন্ত্রীর সভার দিকেই ইঙ্গিত করছে। এ দিনই বেলা ১টা থেকে রাজস্থানের আজমেরে মোদীর সভা। সে কারণেই নির্বাচন কমিশন তাদের নির্ঘণ্ট ঘোষণার সময় পিছিয়ে দেয়।

ভোট হতে চলা পাঁচ রাজ্যের মধ্যে তিনটিতেই ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। এই তিন রাজ্য হল মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়।

মধ্যপ্রদেশ বিধানসভায় ২৩০টি আসন। ২০১৩ সালের ভোটে বিজেপি একাই জিতে নিয়েছিল ১৬৫টি। কংগ্রেস পেয়েছিল ৫৮টি আসন। অন্যান্য ৭।

রাজস্থানে ২০০ আসনের মধ্যে ১৬৩টিতে জিতে ক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি। কংগ্রেস পেয়েছিল মাত্র ২১টি আসন। ১৬টি আসন ছিল অন্যান্যদের দখলে।
ছত্তীসগঢ়ে ৯০ আসনের মধ্যে ৪৯ আসনে জিতেছিল বিজেপি। কংগ্রেস পায় ৩৯টি আসন। অন্যান্য ২।

এই পাঁচ রাজ্যের মধ্যে একমাত্র মিজোরামেই জিতেছিল কংগ্রেস। ৪০ আসনের বিধানসভায় কংগ্রেস জিতেছিল ৩৪টিতে।

তেলঙ্গানা রাজ্য গঠনের পর এই প্রথম বিধানসভা ভোট হতে চলেছে সে রাজ্যে। ২০১৪ সালে অন্ধ্রপ্রদেশ বিধানসভা ভোটে, বর্তমান তেলঙ্গানা এলাকায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল তেলঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতি বা টিআরএস-এর। তার ভিত্তিতেই নবগঠিত রাজ্যে সরকার গড়েছিলেন টিআরএস নেতা চন্দ্রশেখর রাও। তেলঙ্গানার ১১৯টি আসনের মধ্যে টিআরএস দখল করেছিল ৬৩টি। কংগ্রেস পেয়েছিল ২১টি। তেলুগু দেশম পার্টি (টিডিপি) পেয়েছিল ১৫টি। অন্যান্য ২০।

সামনের বছর লোকসভা ভোট হতে চলেছে দেশে। তার আগে সরকার এবং বিরোধী সব পক্ষেরই জোরালো নজর থাকছে এই পাঁচ রাজ্যের দিকে। বিশেষ করে মধ্যপ্রদেশ এবং রাজস্থানের মতো দুই তুলনামূলক বড় রাজ্য। কংগ্রেসের আশা, দুই রাজ্যেই এ বার ভাল ফল করবে তারা।

অন্য দিকে বিজেপি-র কাছে বেশ টেনশনের ভোট এটা। ২০১৪-র লোকসভা ভোটে একের পর এক রাজ্য ভেসে গিয়েছিল মোদী হাওয়ায়। উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, রাজস্থান থেকে শুরু করে গুজরাত, কর্নাটক, বিহার, দিল্লি সর্বত্রই ঝড় বয়েছিল বিজেপির। কিন্তু সামনের লোকসভা ভোটের আগে এই রাজ্যগুলো নিয়ে বেশ চিন্তিত বিজেপি। এই সব রাজ্যে আসন কমবে ধরে নিয়ে, বিজেপি ঝাঁপিয়েছে উত্তর-পূর্ব ভারতের ছোট ছোট রাজ্যগুলোর দিকেও। এবং সেখানে কংগ্রেসকে অনেকটাই পিছনে ফেলে দিয়েছে তারা। উত্তর-পূর্বে কংগ্রেসের একমাত্র দুর্গ এখন মিজোরামই।