অবশেষে রাজি হলেন মমতা, কালীঘাটের বাড়ির সামনে বসছে জোড়া ওয়াচ টাওয়ার


ঠিকানা বদলাতে তিনি কোনও ভাবেই রাজি নন। কিন্তু আদি গঙ্গার পাশে কালীঘাটের পৈতৃক বাড়ির নিরাপত্তা বলয় আঁটোসাঁটো করতে, অবশেষে সম্মতি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবং সেই সম্মতি মেলার পরই, যুদ্ধকালীন তত্পরতায় শুরু হয়ে গিয়েছে দুটি ওয়াচ টাওয়ার বসানোর প্রক্রিয়া। নেওয়া হচ্ছে নিরাপত্তার আরও কিছু ব্যবস্থা।

৩০ বি, হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের এই ঠিকানাতেই মমতার বড় হয়ে ওঠা। ছাত্র রাজনীতি দিয়ে শুরু, তার পর সাংসদ হয়েছেন, হয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, তার পর ২০১১ সালে বাম জমানার পতন ঘটিয়ে সেই থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী— ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক জীবনে অনেক রদবদল ঘটে গিয়েছে, কিন্তু শত অনুরোধেও কালীঘাটের বাড়ি বদলাতে রাজি হননি তিনি।

তাঁর এই বাড়ি না বদলের জেদে রীতিমতো চাপে পড়ে যায় পুলিশ-প্রশাসন। মমতার কালীঘাটের বাড়িতে প্রতি দিন শয়ে শয়ে মানুষ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে হাজির হন। তা ছাড়া এলাকাও বেশ ঘিঞ্জি। রাস্তাঘাট সরু। স্বাভাবিক ভাবেই মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে সব সময়ই চিন্তায় থাকতে হয় পুলিশ-প্রশাসনকে।  

তা ছাড়া ভিআইপি, ভিভিআইপিদের যাতায়াত মমতার বাড়িতে অনেক কাল ধরেই। এ বাড়িতে দলীয় বৈঠকও হয়। এই সব কথা ভেবেই, বাড়ির চারপাশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরালো করার জন্য অনেক দিন ধরেই অনুমতি চাওয়া হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর। অবশেষে অতি সম্প্রতি, পুলিশকে স্বস্তি দিয়ে তিনি সেই সম্মতি দিয়েছেন।

এবং সম্মতি মেলার পর আর দেরি করেনি প্রশাসন। বাড়ির সামনেই দু'টি নজর মিনার বা ওয়াচ টাওয়ার তৈরির কাজ শুরু হয়ে যাবে খুব শীঘ্রই। সেখান থেকে অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র-সহ পাহাড়া দেবেন কলকাতা পুলিশের কম্যান্ডোরা।

এর পাশাপাশি, বাড়ির আশপাশে নজরদারি আরও বাড়ানো হচ্ছে। মমতার বাড়ির এক দিকে আদি গঙ্গা। সামনের রাস্তায় গাড়ি চলাচল করে। বাড়ির চারদিকে কী ভাবে নিরাপত্তার বলয় গড়ে তোলা হবে, স্বরাষ্ট্র দফতরের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে তার পরিকল্পনাও তৈরি করে ফেলেছে পুলিশ।

নবান্ন সূত্রে খবর,  ইতিমধ্যেই পূর্ত দফতর নজর মিনার গড়ার জন্যে টেন্ডার ডেকেছে। যে সংস্থা ওই নজর মিনার তৈরি করবে, রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিতে হবে তাদেরই। আনুমানিক খরচ ধরা হয়েছে ৭৪ লাখ টাকা। কাজ শুরুর পর ৯০ দিনের মধ্যে তা শেষ করতে হবে।

মমতার মতো প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকেও পাম অ্যাভিনিউ-এর সরকারি ফ্ল্যাট থেকে সরাতে পারেনি পুলিশ। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার অনেক আগে থেকেই তিনি সেখানে ছিলেন। এখনও রয়েছেন সেই দু'কামরার ফ্ল্যাটেই। কিছু দিন আগে, অসুস্থ বুদ্ধবাবুকে দেখতে সেখানে গিয়েওছিলেন মমতা। ভগ্ন দশা দেখে ফ্ল্যাটের দ্রুত সংস্কারেরও নির্দেশ দেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী।